‘কিউআর কোড’ ‘স্ক্যান’ করলে ব্যালট বাক্সের যাবতীয় তথ্য বেরিয়ে আসবে। প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোট ব্যালটেই হবে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে রাজ্যে এই প্রথম যে ব্যালট বাক্সে পঞ্চায়েত ভোট হবে, সেগুলির গায়ে থাকবে আলাদা নম্বর এবং ‘কিউআর কোড’। জেলায় জেলায় তেমন ব্যালট বাক্স পাঠানোও হচ্ছে। জলপাইগুড়ি জেলায় অন্তত ১০ হাজার ব্যালট বাক্স প্রয়োজন। ধাপে ধাপে সেগুলি আসছে। জেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি ব্যালট বাক্সের নম্বর দেখে পোর্টালে নথিবদ্ধ করতে। ভোটের সময় কোন বুথে কোন ব্যালট বাক্স পাঠানো হচ্ছে, তা যাতে সহজেই জানা যায়, তাই এই সিদ্ধান্ত। ব্যালট বাক্সের নম্বর জানা থাকলে, গণনার আগে-পরে বাক্স বদলের অভিযোগ উঠবে না বলে মনে করছে প্রশাসন। ‘কিউআর কোড’ ‘স্ক্যান’ করলে ব্যালট বাক্সের যাবতীয় তথ্য বেরিয়ে আসবে। ফলে পুরো প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনা যাবে বলে দাবি।
গত পঞ্চায়েত ভোটে একাধিক গণনাকেন্দ্রে বাক্স বদলের অভিযোগ উঠেছিল। সূত্রের খবর, এ বারে যে ব্যালট বাক্স নির্বাচন কমিশন থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হচ্ছে, সেগুলি নতুন। জেলার ভাঁড়ারে কিছু পুরনো ব্যালট বাক্সও রয়েছে। তবে সেগুলির গায়ে নম্বর বা ‘কিউআর কোড’ নেই। কমিশন সেগুলিকে ফেলে দিতে চাইছে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা এসে পুরনো ব্যালট বাক্সে চিহ্নিতকরণের নম্বর এবং ‘কিউআর কোড’ বসিয়ে দেবেন। সে কাজ চলতি মাস থেকেই শুরু হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক অশ্বিনীকুমার রায় বলেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশ মতো সব ব্যালট বাক্সের নম্বর পোর্টালে তুলে দেওয়া হবে। পুরনো বাক্সে নম্বর বা কিউআর কোড বসানো হবে।’’
পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিটি বুথে চারটি করে ব্যালট বাক্স প্রয়োজন। পঞ্চায়েত সমিতির জন্য বড় মাপের বাক্স, গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য মাঝারি মাপের এবং জেলা পরিষদের জন্য দু’টি ছোট বাক্স। জলপাইগুড়ি জেলায় দু’হাজার ছ’শো আশিটি বুথ হতে পারে। প্রতি বুথে চারটি করে বাক্সের পাশাপাশি থাকবে ২০ শতাংশ অতিরিক্ত বাক্সও। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার বাক্স আসছে জেলায়।
তৃণমূল এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট অবাধ হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রয়েছে।’’ অন্য দিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট শুনলেই একটি বাংলা প্রবচনের কথা মনে পড়ে— রক্ষকই ভক্ষক! বাকিটা দেখার অপেক্ষায়!’’