Mamata Banerjee

আনওয়ার-কাণ্ডে ‘ক্ষুব্ধ’ মমতা, ইস্তফা বিধায়কের

কলকাতায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে দিনতিনেক আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন কেরলের নীলাম্বুর কেন্দ্রের নির্দল বিধায়ক আনওয়ার।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৩
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

তৃণমূল কংগ্রেসের কেরল-জট আরও ঘনীভূত হল! সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া পি ভি আনওয়ার কেরলে ফিরেই বিধায়ক-পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিলেন। শুধু তা-ই নয়, তাঁর পদত্যাগের পরে ওই কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফের প্রার্থীকে সমর্থন করবেন বলে ঘোষণা করে দিলেন। এমনকি, উপনির্বাচনে কংগ্রেসের কাকে প্রার্থী করা উচিত, সেই নামও প্রস্তাব করে দিলেন আনওয়ার! তৃণমূল সূত্রের খবর, গোটা ঘটনাপ্রবাহে ‘ক্ষুব্ধ’ স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা যে লোকসভা কেন্দ্রের সঙ্গে জড়িত, সেখানকার এক বিধানসভা আসনের বিধায়ককে নিয়ে এমন বিড়ম্বনা ‘অবাঞ্ছনীয়’ ছিল বলেই তিনি মনে করছেন।

Advertisement

কলকাতায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে দিনতিনেক আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন কেরলের নীলাম্বুর কেন্দ্রের নির্দল বিধায়ক আনওয়ার। নিজের রাজ্যে ফিরে সোমবার কেরল বিধানসভার স্পিকার এ এন শমসীরের সঙ্গে দেখা করে তিনি বিধায়ক হিসেবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। নির্দল হলেও বামেদের ফ্রন্ট এলডিএফের সমর্থনে ও প্রতীকে বিধানসভায় জয়ী আনওয়ার অন্য দলে যোগ দেওয়ায় তাঁর বিধায়ক-পদ খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে পরিষদীয় সূত্রের মত। সেই পরিস্থিতি এড়াতে তিনি ইস্তফা দিতে পারেন, এমন ইঙ্গিত ছিলই। শেষ পর্যন্ত সেই পথেই হেঁটে আনওয়ার জানিয়েছেন, বিধানসভার উপনির্বাচনে তিনি লড়তে চান না। কংগ্রেসের মলপ্পুরম জেলা সভাপতি ভি এস জয়কে ওই উপনির্বাচনে প্রার্থী করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। সেই সঙ্গেই বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা এবং ইউডিএফের চেয়ারম্যান ভি ডি সতীশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় তাঁর উদ্দেশে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন আনওয়ার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সেই সময়ে বাম জোটে ছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে বিরোধীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অভিযোগ করছেন, এই কথা তখন মনে হয়েছিল। সতীশন ও তাঁর পরিবারের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’

আনওয়ারের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের তরফে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি। তবে দলের তরফে জানানো হয়েছে, আনওয়ারই তৃণমূলের কেরল শাখার আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, সরাসরি গান্ধী পরিবারের সঙ্গে জড়িত ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্র এলাকার এক বিধায়ককে দলে টেনে যে পথে যাওয়া হয়েছে, তাতে তৃণমূল নেত্রী যথেষ্টই ‘অসন্তুষ্ট’। কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতেই পারে কিন্তু গান্ধী পরিবারের সঙ্গে সমীকরণ তার ঊর্ধ্বে বলেই মনে করেন মমতা। সচরাচর দলের নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের জন্মদিনে তৃণমূল নেত্রী যে শুভেচ্ছা-বার্তা পাঠান, এখন আনওয়ারের ক্ষেত্রে তা হয়নি। দলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, গোটা বিষয়ে তৃণমূল নেত্রীর অসন্তোষের প্রতিফলনই এর নেপথ্যে থাকতে পারে। তৃণমূলের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘এর পরে নীলাম্বুরে উপনির্বাচন বা সামগ্রিক ভাবে কেরলে দলের কী করণীয়, দলনেত্রীই সে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’

Advertisement

কেরলের বিরোধী দলনেতা সতীশন অবশ্য আনওয়ারের ‘ক্ষমা’ স্বীকার করেও বলেছেন, ‘‘ওঁর সেই সময়ের অভিযোগের পিছনে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের ভূমিকা ছিল, এটা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে। তবে আনওয়ারের এখনকার বক্তব্যে ইউডিএফের সিদ্ধান্তে কোনও প্রভাব পড়বে না। ওঁকে ফ্রন্টে নেওয়া হবে কি না বা উপনির্বাচনে কে প্রার্থী হবেন, ইউডিএফ-ই ঠিক করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement