প্রতীকী ছবি
সংক্রমণ বাড়তে থাকায় হাওড়া জেলায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার জন্য কোভিড-শয্যা বেড়েছে। কিন্তু অক্সিজেন কোথায়?
অক্সিজেনের জন্য কলকাতা লাগোয়া এই জেলাতেও কার্যত হাহাকার দেখা দিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দিন দশেক আগে ২০০টি সিলিন্ডারের জন্য তাদের অনুমোদিত ‘ভেন্ডার’-কে বরাত দেওয়া হয়েছিল। এখনও মেলেনি। হাসপাতালগুলিতে যে পরিমাণ অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত আছে, তা খুব শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে। নতুন করে সিলিন্ডার পাওয়া না-গেলে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কারও করছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
উপায় না-দেখে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জেলাশাসককে চিঠি লিখে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘যে সংস্থা অক্সিজেন জোগান দেয়, তাদের আমরা দু’দিন অন্তর চিঠি দিচ্ছি। তারা হ্যাঁ বা না— কিছুই জানাচ্ছে না। হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের মজুত যা আছে, তা দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। তারপরে কী হবে ভাবতে পারছি না।’’ জেলাশাসক মুক্তা আর্য জানান, সমস্যাটির কথা রাজ্য প্রশাসনের ঊর্ধতন স্তরে জানানো হয়েছে।
কেন প্রয়োজন হচ্ছে বাড়তি অক্সিজেনের?
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হাওড়ায় সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে, তাতে চিকিৎসার জন্য অনেক হাসপাতালে নতুন করে কোভিড-বিভাগ চালু করা হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় যেখানে কোভিড-শয্যার সংখ্যা আগে ছিল ৬০০, তা এক লপ্তে বাড়িয়ে ১২০০ করা হয়েছে। শয্যা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন হয় করোনা চিকিৎসার সব রকমের ব্যবস্থা। যার মধ্যে প্রধান হল অক্সিজেন। সেই কারণেই গত ১২ এপ্রিল ২০০টি সিলিন্ডারের জন্য ভেন্ডারকে বরাত দেওয়া হয়।
হাসপাতালগুলির সঙ্গে কথা বলেও সমস্যার কথা টের পাওয়া গিয়েছে। উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সম্প্রতি ৮০ শয্যার কোভিড-বিভাগ চালু করা হয়। এখানে ভর্তি রয়েছেন ৪০ জন করোনা রোগী। সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার বলেন, ‘‘যা অক্সিজেন আছে তাতে ঠেকা দিয়ে দু’একদিন চালানো যাবে।’’ ১০০টি সিলিন্ডার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে চাওয়া হলেও তা আসেনি জানিয়ে সুপার বলেন, ‘‘মজুত অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে কী ভাবে চলবে বুঝতে পারছি না। যে ১০০টি সিলিন্ডার চেয়েছি তা দ্রুত না এলে বিপদে পড়ব।’’
শুধু ওই হাসপাতালই নয়, উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল, গাববেড়িয়া স্টেট জেনারেল, বাউড়িয়া ফোর্ট গ্লস্টার স্টেট জেনারের হাসপাতালেও চালু করা হয়েছে কোভিড-বিভাগ। সর্বত্র অক্সিজেনের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে।