পুজোয় অশান্তি ছড়াতে পারে ‘বহিরাগতরা’, আশঙ্কা নবান্নর

পুলিশ প্রধানের সুরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন পুজো উদ্বোধনে বেরিয়ে কলকাতাবাসীকে বহিরাগত সম্পর্কে সজাগ থাকতে বলেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৩
Share:

‘বহিরাগতরা’ এসে দুর্গাপুজোর সময়ে রাজ্যে গোলমাল পাকাতে পারে। শুক্রবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। সেইসঙ্গে রাজ্যবাসীর প্রতি তাঁর অনুরোধ, উৎসবের দিনগুলিতে যে কোনও ধরনের গুজব সম্পর্কে সজাগ থাকবেন।

Advertisement

ডিজি বলেন, ‘‘এমনিতে পুজোয় কোনও ধরনের হাঙ্গামা হতে পারে, এমন কোনও নির্দিষ্ট তথ্য আমাদের হাতে নেই। পুজোয় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং বিদেশ থেকেও অনেকে এ রাজ্যে আসেন। তাঁরা আমাদের অতিথি। পাশাপাশি আমাদের আশঙ্কা, কিছু বহিরাগত গোলমাল পাকানোর মতলবে এ রাজ্যে ঢুকতে পারে। সে ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসন কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে।’’

পুলিশ প্রধানের সুরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন পুজো উদ্বোধনে বেরিয়ে কলকাতাবাসীকে বহিরাগত সম্পর্কে সজাগ থাকতে বলেছেন। কালীঘাটের ৬৬ পল্লির পুজোমণ্ডপে উদ্বোধনের পরে মমতা বলেন, ‘‘বাইরে থেকে কিছু লোক টিকিট কেটে ফেলেছেন। এখানে এসে গোলমাল পাকাতে চাইছেন তাঁরা। তাই আপনাদের সকলকে সতর্ক করছি। বাংলার ঐতিহ্যকে নষ্ট করবেন না।’’

Advertisement

সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মিলন উৎসব হিসেবে রাজ্যে দুর্গাপুজোর যে ঐতিহ্য রয়েছে, তা এ বার গুজব ছড়িয়ে নষ্ট করার চেষ্টাও কোনও কোনও মহল করছে বলে নবান্নের আশঙ্কা। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘নির্বিঘ্নে পুজো কাটানোর ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গুজবের মোকাবিলা করা।’’ রাজ্যবাসীর প্রতি তাঁরও অনুরোধ, ‘‘কোনও কিছু শুনলেই, তা আগে যাচাই করে নেবেন।

থানায় ফোন করে জানতে চাইবেন। অযথা বিভ্রান্ত হবেন না, কাউকে করবেনও না।’’ স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে তিনি নিজেও এ রকম গুজবের শিকার হয়েছিলেন। কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বলেছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে কোনও একটা মহল এ সব করার চেষ্টা করছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং হবেও।’’

এই গোলমাল পাকানোর পিছনে যে আসলে বিজেপি-ই, তা-ও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী আগে থেকেই বলে রেখেছেন, বিসর্জন বা অস্ত্রপুজোর মতো বিষয়গুলিকে সামনে এনে আসলে তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে। সেই ষড়যন্ত্রেরই অঙ্গ হল, পুজোর দিনগুলিতে গোলমাল পাকানোর আশঙ্কা।

অবশ্য বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভাবছেন, গোলমাল হলে বিজেপির কাঁধে দায়টা দিব্যি চাপিয়ে দিতে পারবেন। কিন্তু গোলমাল হলে দায় রাজ্য প্রশাসনের উপরেই বর্তাবে।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘বাইরে থেকে লোক এসে গোলমাল

পাকাবে বলে আগাম খবর থাকলে প্রশাসন সর্তক হয়ে ব্যবস্থা নেবে, নাকি তাদের গোলমাল পাকাতে দেবে, সেটাই আসল প্রশ্ন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement