সৌগত রায়। ফাইল চিত্র।
২৪ ঘণ্টা মধ্যেই ‘মত বদল’। শনিবার তিনি বলেছিলেন, ‘এমন ভাষা অনুমোদন করছি না।’ আর রবিবার সকালে সেই সৌগত রায় তৃণমূলের অন্যদের সুরে সুর মিলিয়ে ভেসে গেলেন ‘কুকথার’ স্রোতে। যা শুনে বিরোধীদের প্রশ্ন, এটা কি সৌগতের ‘স্বাভাবিক ভাষা’? নাকি দলীয় নেতৃত্ব এ সব বলতে বাধ্য করছেন?
কী বলেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়? তিনি এ দিন কামারহাটিতে এক অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘তৃণমূল সমালোচকদের গায়ের চামড়া দিয়ে পায়ের জুতো তৈরি হবে।’’ তাঁকে ‘সঙ্গত’ করে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র জানান, লাঠি তিনি জোগান দেবেন। এই প্রেক্ষিতে বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে বসে প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, “যে সৌগতবাবুকে আমি চিনি, তিনি এই ধরনের কথা বলতে পারেন না। যদি বলে থাকেন, তা হলে দলের চাপে তিনি বলছেন। খারাপ লাগছে।” এর পরেই অধীরের কটাক্ষ, ‘‘তাঁকে (সৌগতকে) আগামী দিনে টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দল। তার আগে তাঁকে কলঙ্কিত করার জন্যই এই ধরনের কথা বলাচ্ছে তৃণমূল। সৌগতবাবুদের মতো প্রহ্লাদদের ময়দানে নামানো হচ্ছে।’’
সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীরও প্রশ্ন, ‘‘এটা কি ওঁর (সৌগতের) স্বাভাবিক ভাষা? নাকি সঙ্গদোষ? নাকি ক্ষমতা হারানোর ভয় পাচ্ছেন?’’ রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের মতে, “ভয়, আতঙ্ক, হতাশা থেকে সৌগত রায়ের মতো প্রবীণ অধ্যাপক এমন মন্তব্য করেছেন। তাঁর কাছ থেকে সমাজ এমন মন্তব্য প্রত্যাশা করে না।’’ মদনের মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ‘‘ওঁর বয়স হয়েছে। পার্টিও ওঁকে পাত্তা দেয় না।” তাঁর দাবি, “ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। অনুব্রত মণ্ডল একা টাকা খেয়েছে— এ কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। কাটমানির খাদ্যশৃঙ্খল চলছে।”
সৌগত-মদনের মতো অন্য তৃণমূল নেতাদের হুমকি, হুঁশিয়ারির স্রোত অব্যাহতই রয়েছে। শনিবার নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা বলেছিলেন, ‘‘আজ যাঁরা চড়াম চড়াম করছেন, নকুলদানা বিলি করছেন, তাঁরা আগে গাঁজার কেস, ডাকাতির কেস খান।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে জেলা যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মতিন আনসারির হুঁশিয়ারি, “যাঁরা এখন রাস্তায় গরু নিয়ে মিছিল করছেন, গুড়-বাতাসা বিলি করছেন, নেতাদের নির্দেশ পেলেই অনুব্রতের কথা মতোই চড়াম চড়াম করে চামড়া তুলে আনব।”