রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের মুখ্য তথ্য কমিশনার পদে প্রাক্তন আইপিএস বীরেন্দ্রকে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত ঘিরে ফের রাজভবনের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বীরেন্দ্রকে মুখ্য তথ্য কমিশনার হিসেবে নিয়োগের সুপারিশে সই করেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বিরোধী নেতা হিসেবে তিনি আপত্তি জানানো সত্ত্বেও রাজ্যপাল ওই নিয়োগে সম্মতি দেওয়ায় কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, কেন্দ্রীয় সরকার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, সিবিআই প্রধান বা ভিজ়িল্যান্স কমিশনার নিয়োগের সময়ে কি বিরোধীদের কথায় আমল দেয়?
তথ্য কমিশনে নিয়োগের জন্য মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার স্পিকার এবং বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে কমিটি রয়েছে। তথ্য কমিশনার হিসেবে যাঁরা সম্ভাব্য প্রার্থী, তাঁদের সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করে কমিটির গত বৈঠকে হাজির ছিলেন না শুভেন্দু। সংখ্যাগরিষ্ঠতার নিরিখে কমিটি বীরেন্দ্রকে বেছে নেওয়ার পরে তিনি রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। রাজ্যপাল তার পরেও বীরেন্দ্রের নিয়োগ-সুপারিশে সম্মতি দেওয়ায় এই সিদ্ধান্তকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু সোমবার বলেছেন, ‘‘রাজ্য পুলিশের ডিজি পদ থেকে ওই অফিসারকে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তাঁকে আর নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও দায়িত্বে রাখা যাবে না বলেও কমিশন জানিয়ে দিয়েছে। শাসক পক্ষের প্রতি যাঁর পক্ষপাতিত্ব নিয়ে এত বড় প্রশ্ন রয়েছে, তাঁকেই মুখ্য তথ্য কমিশনার নিয়োগ করতে সম্মতি দিচ্ছেন রাজ্যপাল!’’ যার প্রেক্ষিতে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে, এটাই নিয়ম। দিল্লির সরকার যখন একই ভাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, সিবিআই প্রধান বা ভিজ়িল্যান্স কমিশনার নিয়োগ করে, তখন শুভেন্দুদের আপত্তি কোথায় থাকে?’’ এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর অবশ্য বিরোধী দলনেতার কাছে পাওয়া যায়নি।
পরে খেজুরিতে এ দিন তথ্য কমিশনার নিয়োগ প্রসঙ্গে শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘‘সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। কোনও সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি।’’ রাজ্যপাল বোসের প্রতি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের চিন্তন শিবির করা উচিত! কতটা বেআইনি কাজকে সমর্থন করব আর কতটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকব, এটা রাজ্যপালের ঠিক করা উচিত।’’