আদালতে হাজির করানো হচ্ছে হারেজকে। — নিজস্ব চিত্র।
পড়াশোনা বেশি দূর করেননি। তবে ‘মোবাইল বিশেষজ্ঞ’ হিসাবে নামডাক ছিল হারেজ শেখের। বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে এসটিএফ। নদিয়ার নবদ্বীপের শান্ত, মৃদুভাষী, সাদামাটা যুবকের গ্রেফতারির খবর পেয়ে স্তম্ভিত স্থানীয়েরা!
মঙ্গলবারই হারেজকে আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে এসটিএফ। ধৃতকে যুবককে জেরা করে শাহাদত জঙ্গি মডিউলের সঙ্গে তাঁর যোগ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পেতে চাইছেন গোয়েন্দারা।
এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়া জেলার নবদ্বীপ এলাকার মায়াপুরের মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা হারেজ। বয়স ২৭ বছর। হারেজের পরিবারের তরফে এক জন দাবি করেছেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই মানসিক সমস্যা রয়েছে হারেজের। চিকিৎসাও চলছে নিয়মিত। ও কী করে এই সব করবে ভাবতেই পারছি না।’’
হারেজের এক সময়ের সহপাঠী জানিয়েছেন, মধ্য মেধার হারেজ উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। খুব কম কথা বলতেন। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে নমাজ পড়তেন। সব সময় ঘরের মধ্যে বসে থাকতেন এবং মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করতেন। কেউ দেখতে চাইলে মোবাইলে হাত দিতে দিতেন না।
এর আগে জঙ্গিযোগে কাঁকসার পানাগড় থেকে গ্রেফতার হন হাবিবুল্লাহ। ঘটনাচক্রে, পানাগড়েই ভারতীয় স্থলসেনা ও বায়ুসেনার ঘাঁটি রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ‘আনসার আল ইসলাম’ নামে একটি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন রয়েছে বাংলাদেশে। ‘আল কায়দা’র সঙ্গেও ‘আনসার আল ইসলাম’-এর যোগ রয়েছে। বাংলাদেশেও সক্রিয় সেটি। সেই সংগঠনেরই একটি শাখা ‘শাহাদত’-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন হাবিবুল্লাহ। তাঁর বিরুদ্ধে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত কাঁকসা থানায় মামলা রুজু করা হয়। বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধী আইনের (ইউএপিএ) ধারায় মামলায় হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এই হাবিবুল্লাহকে জেরা করেই মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে হারেজকে। হাবিবুল্লাহ এবং হারেজকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চাইছে এসটিএফ। হাবিবুল্লাহর পরবর্তী পরিকল্পনা বিষয়ে জানতে চাইছে তারা।