মুর্শিদ
জঙ্গি দলে নিয়োগ করেই ক্ষান্ত হয়নি মুর্শিদ। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, সে সংগঠনের সদস্যদের বাংলাশের সীমান্তবর্তী এলাকায় জমি কিনে ধর্মীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (মরকজ়) নির্মাণ করতে বলেছিল। ধর্মীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আড়ালেই জেহাদি প্রশিক্ষণের শিবির খোলার পরিকল্পনা ছিল তার। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, ধর্মীয় সাংস্কৃতিক স্থান হলে কারও সন্দেহ হবে না। বিভিন্ন মরকজ়ে নানা জায়গা থেকে লোক যাতায়াত করে, নানা আলোচনার আসর বসে। কিন্তু বিনা অনুমতিতে বাইরের কেউ প্রবেশাধিকার পায় না। ফলে লোকচক্ষুর সামনে থাকলেও কেউ সন্দেহ করত না।
এক গোয়েন্দাকর্তার কথায়, “নিজেদের ধর্ম ও ধর্মের সংস্কৃতিকে ঢাল করেই জেহাদি শিবিরের ছক কষেছিল। স্থানীয় মুসলিমদের আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চেয়েছিল ধৃতেরা।” গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এর জন্য টাকাও দেওয়ার কথা ছিল সংগঠনের সদস্যদের। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় কোনও রকমে পুলিশ টের পেলেই সীমান্ত টপকে বাংলাদেশে পালাতে পারত অভিযুক্তেরা।
এনআইএ জানতে পেরেছে, লকডাউনে এলাকার বাইরে না-থাকায় নিজেদের মধ্যে এ ব্যাপারে যোগাযোগ দৃঢ় হয়েছিল। সে সময় মুর্শিদও গ্রামের বাড়িতে ফিরেছিল। সে সময় সে কাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। একটি সূত্রের দাবি, অন্তত দেড়শো জনকে নিয়োগ করেছিল। তবে বেশ কয়েক জন এদের মতিগতি সুবিধার নয় বুঝতে পেরে এই সংশ্রব ত্যাগ করে।
আরও পড়ুন: দেশবিরোধী কোনও সংগঠনের ফাঁদ এড়ান, বললেন ইমামরা
ধৃতদের প্রাথমিক ভাবে আল কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশের শাখার সদস্য বলা হলেও প্রাক্তন সেনা ও গোয়েন্দা-কর্তাদের অনেকেই এ নিয়ে সন্দিহান। তাঁরা বলছেন, আল কায়দা যে ধরনের সংগঠন তার নেটওয়ার্ক এত দুর্বল হবে না। যদিও বর্তমান গোয়েন্দাকর্তাদের অনেকেই বলছেন, আল কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশীয় শাখা আসলে বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনের একটি যৌথ মঞ্চ বলা চলে। তাদের লক্ষ্য একেবারে তৃণমূল স্তরে সংগঠনের বিস্তার। ধৃতেরা সেই স্তরেরই সদস্য।
কেরল ও মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত ৯ জনকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরো ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যের গোয়েন্দারাও জেরা করছেন। দেশের আর কোথায় কোথায় এমন জঙ্গি মডিউল রয়েছে তারই খোঁজ চলছে।