রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।
সিবিআই এখনও তাঁকে খুঁজে পায়নি। এ বার তিনি নিজেই সিবিআই-কে চিঠি লিখলেন।
সোমবার সিবিআইকে ই-মেল করে রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমার জানিয়েছেন, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি ছুটি নিয়েছেন। তার পরে কাজে যোগ দিয়ে সিবিআইয়ের সঙ্গে দেখা করবেন। ইতিমধ্যে এ দিনই হাইকোর্টে ফের আগাম জামিনের আবেদনও করেছেন তিনি।
সরকারি খাতায় অবশ্য এখনও অবধি ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি নেওয়া রয়েছে রাজীবের। তবে নবান্ন সূত্রের খবর, রাজীব ছুটি বাড়ানোর আবেদন করলে তা মঞ্জুর না করার কারণ নেই। রাজ্য পুলিশের ডিজি চাইলেই তা করতে পারেন।
সিবিআইয়ের অবশ্য দাবি, রাজ্য সরকার রাজীবের ছুটির মেয়াদ বাড়ালে সিবিআইয়ের সঙ্গে সরাসরি ‘অসহযোগিতা’ করা হবে। কারণ, সিবিআইয়ের যুক্তি— তারা রাজীবকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে, রাজ্যকে চিঠি দিয়ে রাজীবকে সিবিআইয়ের সামনে হাজির করানোর জন্য বলেছে। রাজ্য সেখানে পাল্টা অসহায়তার কথা বলে জানিয়েছে, রাজীবের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
রাজ্য যদি ছুটি মঞ্জুর না করে? রাজীবকে তা হলে ২৬ তারিখ গিয়ে ভবানীভবনে কাজে যোগ দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে কি রাজীবকে ভবানীভবন থেকে গ্রেফতার করা হতে পারে? রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে গিয়ে গোয়েন্দা প্রধানকে গ্রেফতার করা কি সহজ হবে? সূত্রের খবর, রাজীবকে ঘিরে রেখেছেন রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের বেশ কিছু অফিসার। তবে সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, ‘‘সিবিআই আইনি পথে রাজীবকে গ্রেফতার করতে যাবে। সেখানে কেউ বাধা দিতে গেলে তাকেও গ্রেফতার করার আইনি পথ খোলা রয়েছে।’’
আর যদি ছুটি মঞ্জুর হয়? সে ক্ষেত্রে ৩০শের আগে রাজীবের খোঁজ না পেলে সিবিআইকে অপেক্ষা করতে হবে। রাজীবের দাবি, তিনি ৩০শের পর কাজে যোগ দিয়ে নিজেই সিবিআইয়ের কাছে যাবেন। রাজীবের ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, এর মধ্যে যদি হাইকোর্টে আগাম জামিন পেয়ে যান, তা হলে রক্ষাকবচও তাঁর সঙ্গে থাকবে। বস্তুত সূত্রের খবর, রক্ষাকবচ না নিয়ে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে চাইছেন না রাজীব। সেই হিসেব করেই ঘুঁটি সাজাচ্ছেন তিনি।
এ দিনই আগাম জামিন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজীব। আজ, মঙ্গলবার বিচারপতি সহিদুল্লা মুনশি ও বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিন দুপুরে রাজীবের হয়ে আগাম জামিনের আবেদন করতে হাইকোর্টে আসেন তাঁর স্ত্রী সঞ্চিতা কুমার। খবর পেয়ে সিবিআইয়ের অফিসারেরাও হাইকোর্টে পৌঁছন। মঙ্গলবারের শুনানি নিয়ে আলোচনা করেন আইনজীবীদের সঙ্গে। রাজীবের বাড়ি গিয়ে দেখা করার জন্য আরও একটি নোটিস দিয়ে এসেছেন তাঁরা। ‘ওথ কমিশনার’-এর কার্যালয়ের অফিসারেরা সঞ্চিতাকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, রাজীব কয়েক দিন আগে ওকালতনামায় সই করে গিয়েছেন।