Kolkata Airport

Omicron: ওমিক্রন-চক্করে নাকাল বিদেশফেরত যাত্রীরা

সব চেয়ে বড় সমস্যা, বিদেশ থেকে সরাসরি কলকাতায় আসা যাত্রীদের হাতে বিকল্প মাত্র গুটিকয়েক উড়ান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৪২
Share:

হিমশিম খেতে হচ্ছে বিদেশ থেকে কলকাতায় আসা বিমানযাত্রীদের। ফাইল চিত্র।

সংক্রমণ ছড়ানোর দক্ষতায় ওমিক্রন তার পূর্ববর্তী করোনা-অবতারগুলিকে টেক্কা দিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। আবার সে যত প্রতাপ দেখাচ্ছে, তার থাবা এড়ানোর তাগিদে ততই বদলাতে হচ্ছে নিয়মবিধি। আর সেই নিত্য বিধিবদলের সঙ্গে তাল রাখতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিদেশ থেকে কলকাতায় আসা বিমানযাত্রীদের।

Advertisement

প্রথমত, আপাতত যে-সব দেশ থেকে আসামাত্রই দেশের বিমানবন্দরে নতুন করে করোনা পরীক্ষা করাতে হচ্ছে, সেই ১৩টি দেশের তালিকা সকলের কাছে নেই। দ্বিতীয়ত, চলতি মাসের শেষে বা জানুয়ারির গোড়ায় যাঁদের আসার কথা, তাঁরা জানতে চাইছেন, নতুন কোনও দেশ এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ঢুকবে কি না?

সব চেয়ে বড় সমস্যা, বিদেশ থেকে সরাসরি কলকাতায় আসা যাত্রীদের হাতে বিকল্প মাত্র গুটিকয়েক উড়ান। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে দিল্লি বা মুম্বই ঘুরে আসতে হচ্ছে। বিদেশাগত যাত্রী ভারতের যে-শহরে প্রথমে নামছেন, সেখানেই পড়ছেন পরীক্ষার মুখে। এই নিয়মের জাঁতাকলে পড়ে সোমবার দিল্লি থেকে কলকাতার উড়ান মিস করেন স্পোর্টস মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নিশীথরঞ্জন চৌধুরী।

Advertisement

বিশ্ব ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রণ পেয়ে নিশীথবাবু স্পেন যান ২৫ নভেম্বর। ফিরতি পথে সোমবার সকাল ৮টায় নামেন দিল্লিতে। স্পেন-সহ ইউরোপের সব দেশই এখন সংক্রমণের কালো তালিকাভুক্ত। ফলে অন্য যাত্রীদের মতো তাঁকেও দিল্লি বিমানবন্দরেই পরীক্ষা করাতে হয়েছে। ‘‘আমার কলকাতার উড়ান ছিQল ১২টা ১০ মিনিটে। হাতে মাত্র চার ঘণ্টা। তাই ৫০০ টাকা দিয়ে আরটিপিসিআর না-করিয়ে ৩৫০০ টাকায় র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা (র‌্যাট) করাই। বলা হয়েছিল, ৯০ মিনিটে রিপোর্ট দেবে। কিন্তু Qতা আড়াই ঘণ্টা পরে পেয়েছি’’, ফোনে জানান নিশীথবাবু।

রিপোর্ট নিয়ে নিশীথবাবু-সহ ছ’জন কলকাতার উড়ান ধরার জন্য ছোটেন এয়ার ইন্ডিয়ার কাউন্টারে। তখনও উড়ান ছাড়তে সওয়া এক ঘণ্টা বাকি ছিল। সেখানে গিয়ে শোনেন, উড়ান ভরে গিয়েছে। আর ঠাঁই নেই। সাধারণ ভাবে বিমানে আসনের তুলনায় বেশি টিকিট বিক্রি করা হয়। যে-সব যাত্রী শেষে আসেন, তাঁদের জায়গা দেওয়া হয় পরের উড়ানে। বিশ্ব জুড়েই এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

নিশীথবাবুর অভিযোগ, সময়মতো র‌্যাট-রিপোর্ট পেয়ে তাঁরা আগে কাউন্টারে পৌঁছলে হয়তো জায়গা পেতেন ওই উড়ানেই। কিন্তু তাঁর জায়গা হয় বিকেল ৫টার উড়ানে। তিনি বলেন, ‘‘আমার মতো অন্তত ২০ জনকে বিকেল পর্যন্ত বিমানবন্দরে বসে থাকতে হয়। লাউঞ্জের ব্যবস্থা করা হয়নি। যা খাবার দিয়েছিল, মুখে তোলা যায়নি। এত ক্ষণই যদি অপেক্ষা করতে হবে, বাড়তি তিন হাজার টাকা দিয়ে র‌্যাট করালাম কেন?’’ এয়ার ইন্ডিয়া এই অসুবিধার জন্য ক্ষমা চেয়ে জানিয়েছে, নিয়ম মেনে তাঁকে পরের উড়ানেই জায়গা দেওয়া হয়েছে।

কলকাতার বাসিন্দা শোভন গুপ্ত এ-সব নিয়ে খুব চিন্তিত। জানুয়ারিতে তাঁর ভায়রা, চিকিৎসক অশোক চৌধুরীর আমেরিকা থেকে কলকাতায় আসার কথা। আমেরিকার নাম এখনও ওমিক্রনের কালো তালিকায় নেই। কিন্তু জানুয়ারির আগে সে যে ওই তালিকায় ঢুকবেই না, নিশ্চিত করে কেউ তা বলতে পারছেন না। নিউ ইয়র্কে এয়ার ইন্ডিয়ারই টিকিট কেটেছেন অশোকবাবু। সেই উড়ানও দিল্লি হয়ে কলকাতায় আসবে। শোভনবাবুর আশঙ্কা, ‘‘দিল্লিতে নেমে যদি পরীক্ষা করাতে হয়, ছ’ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, তা হলে তো ও কলকাতার উড়ান ধরতে পারবে না। নয়তো এমন হিসেব করে কলকাতার উড়ান নিতে হবে, যাতে দিল্লিতে অন্তত ১০ ঘণ্টা থাকতে পারে। আর কোনও কারণে পরীক্ষার পরে সন্দেহ হলে দিল্লিতে যদি নিভৃতবাসে পাঠিয়ে দেয়, তা হলে তো কলকাতায় আসার উদ্দেশ্যটাই মাঠে মারা যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement