বিড়ি বাঁধছেন রঞ্জিত বিশ্বাস এবং সুচিত্রা বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।
নাম ছিল বাংলা আবাস যোজনার তালিকায়। প্রথম কিস্তির টাকাও মিলেছে। সেই টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরির বালি, পাথরও কেনা হয়েছে। এমন সময়ে বাড়িতে বিডিওর চিঠি! তথ্য গোপন করে আবাসের উপভোক্তা হওয়ায় সাত দিনের মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে চিঠিতে। তা না-হলে থানায় এফআইআর। যার পরিণাম গ্রেফতারি! এই পরিস্থিতিতে বাড়ি ছেড়ে আমবাগান-লিচুবাগানে আশ্রয় নিয়েছেন নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বৃদ্ধ দম্পতি রঞ্জিত বিশ্বাস এবং সুচিত্রা বিশ্বাস।
রঞ্জিত এবং সুচিত্রা কৃষ্ণগঞ্জের স্বর্ণখালি গ্রামের বাসিন্দা। দু’জনেই বিড়ি শ্রমিক। ছেলের পাকা বাড়ি থাকলেও সেই বাড়িতে থাকেন না তাঁরা। গ্রামে দুই শতক জমির উপর টিনের ঘরে তাঁদের বাস। বাংলা আবাস যোজনার উপভোক্তার তালিকায় তাঁদের নাম ছিল। প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকাও পেয়েছিলেন দম্পতি। তা দিয়ে বাড়ি তৈরির কাজও শুরু করে ফেলেছিলেন তাঁরা। তার মধ্যেই কৃষ্ণগঞ্জ বিডিও অফিস থেকে তাঁদের নোটিস পাঠানো হয়।
দম্পতি জানান, নোটিসে জানানো হয়েছে, সাত দিনের মধ্যে বিডিও অফিসে টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় সরকারকে মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাঁদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে। কিন্তু প্রথম কিস্তির সব টাকা খরচ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সেই টাকা ফেরত দিতে পারেননি। কিন্তু বিডিও অফিস থেকে ক্রমাগত চাপ দেওয়া হচ্ছে। গ্রেফতারি এড়াতে এখন বাগানে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা।
রঞ্জিত বলেন, ‘‘প্রথমে পঞ্চায়েত, পরে বিডিও এবং শেষে থানার লোকেরা এসে তথ্য সংগ্রহ করে গিয়েছে। তবেই সরকার বাড়ি দিয়েছে। বাড়ি তৈরির যে টাকা দেওয়া হয়েছে, সেই টাকা খরচ করে ফেলেছি। এখন কোথা থেকে টাকা ফেরত দেব?’’
কৃষ্ণগঞ্জ বিডিও সৌগত সাহা বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশিকায় যা আছে, তা মেনেই কাজ হবে। ’’