কোন্নগরের এই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় দম্পতির ঝুলন্ত দেহ। নিজস্ব চিত্র
রবিবার সকালে বাড়ি থেকে উদ্ধার হল বৃদ্ধ দম্পতির ঝুলন্ত দেহ। এই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য হুগলির কোন্নগরের এস সি চ্যাটার্জি স্ট্রিটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির ছেলে উচ্চশিক্ষিত হয়েও সম্প্রতি হোম ডেলিভারির ব্যবসা শুরু করেছিলেন। পুলিশের অনুমান, তার জেরেই মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করে বসেন ওই দম্পতি।
রবিবার সকালে উদ্ধার হয় দীপক সরকার এবং তাঁর স্ত্রী ভবানী সরকারের ঝুলন্ত দেহ। দু’জনেই সত্তোরর্ধ্ব। দু’জনেই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। কোন্নগর পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, দোতলার বারান্দায় মেলে ভবানীর দেহ। দীপকের দেহ ছিল ঘরে। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সকালে ওই দম্পতির ছেলে দিব্যেন্দু সরকার তাঁদের খবর দেন। পুলিশ দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করেছেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। তার পিছনে পারিবারিক ‘সঙ্কট’-এর কথা তুলে ধরছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের মতে, দীপক এবং ভবানীর সন্তান দিব্যেন্দু লেখাপড়ায় ভাল ছিলেন। মাস্টার্স করেও চাকরি পাননি। পরবর্তী কালে তিনি পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। কিন্তু লকডাউনের জেরে সেই ব্যবসায় ধাক্কা খান দিব্যেন্দু। এর পর বাড়ি বাড়ি খাবার দেওয়ার ব্যবসাও শুরু করেন। কিন্তু তাতেও তেমন পসার জমেনি। হোম ডেলিভারির ব্যবসা নিয়ে আপত্তি ছিল দীপক এবং ভবানীর। ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দীপক এবং ভবানী মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলেই মনে অনুমান প্রতিবেশীদের। পুলিশের ধারণা, শনিবার রাতে ওই দম্পতি গলায় দড়ি দেন। তবে এর পিছনে ভিন্ন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। দিব্যেন্দুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: পৌষ শেষ হওয়ার আগেই শহর থেকে গায়েব শীত, পারদ চড়ছে জেলাতেও
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে করোনার টিকা দিতে চান মমতা, খরচ নিয়ে প্রশ্ন
পুলিশের বক্তব্যে সিলমোহর দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। দিব্যেন্দুর প্রতিবেশী ঋষিকেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছেলেটি উচ্চশিক্ষিত জানি। চাকরি না পাওয়ায় হোম ডেলিভারির ব্যবসা শুরু করেছিল। তাতে হয়তো ওর বাবা, মায়ের অহংবোধে আঘাত লেগেছিল।’’