ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানার ওসি গৌতম বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
থানায় নিজের কোয়ার্টারেই গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল ওসির। থানার কোয়ার্টারে একাই থাকতেন ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানার আধিকারিক (ওসি) গৌতম বিশ্বাস। আটান্ন বছর বয়সী ওই পুলিশ আধিকারিকের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে পুলিশ মহলেই তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে বুধবার রাতে থানার কাজ শেষ করে কোয়ার্টারে যান গৌতমবাবু। সকালে যে পরিচারিকা তাঁর কোয়ার্টারে কাজ করেন তিনি দরজা বন্ধ দেখে প্রথমে কলিং বেল বাজান। কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে ডাকাডাকি করেন এবং দরজায় ধাক্কা দেন। তারপরও গৌতমবাবুর কোনও আওয়াজ না পেয়ে তিনি থানায় খবর দেন। গৌতমবাবুর সহকর্মীরা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখেন, সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁর দেহ ঝুলছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের তদন্তকারীরা আত্মহত্যা বলেই মনে করছেন। সুন্দরবন পুলিশ জেলার এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, কোনও সুইসাইড নোট এখনও পাওয়া যায়নি গৌতমবাবুর ঘর থেকে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময় তাঁর সক্রিয়তা নজর কেড়েছিল জেলা প্রশাসনের। দক্ষ আধিকারিক হিসাবেই জেলা পুলিশ মহলে পরিচিত তিনি। কেন তিনি হঠাৎ আত্মহত্যা করলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। তবে জেলা পুলিশের নিচু তলায় গোটা ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মী বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতনরা গৌতমবাবুকে বেশ কিছু ব্যাপারে চাপ দিচ্ছিলেন। সেই চাপ সামলাতে না পেরেই হয়তো এ রকম সিদ্ধান্ত।” অন্য এক পুলিশ কর্মী অভিযোগ করেন, ‘‘বুধবার এক ডেপুটি পুলিশ সুপার মর্যাদার আধিকারিক প্রকাশ্যে গৌতমবাবুকে অপমানজনক কিছু কথা বলেন। আত্মহত্যার পিছনে সেটাও কারণ হতে পারে।”
আরও পড়ুন: মেঘে ঢাকা কলকাতা থেকে দেখা গেল সূর্যের আংশিক গ্রহণ
আরও পড়ুন: বিক্ষোভ থেকে বন্দুক উঁচিয়ে পুলিশকে গুলি, ছবি প্রকাশ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের
এক পুলিশ কর্মী সম্প্রতি মালবাজারের ওসি অসীম মজুমদারের উদাহরণ টেনে আনেন। ওই পুলিশ আধিকারিক এক অতি প্রভাবশালী শাসক নেতার ঘনিষ্ঠের বালি খাদানে চলা বেনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওপরওয়ালাদের রোষের মুখে পড়েন। তারপরই তিনি ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে। সুন্দরবন পুলিশ জেলার ওই কর্মী বলেন, ‘‘সব জেলাতেই এ ধরনের সমস্যা এবং চাপ সামলে আমাদের কাজ করতে হয়।”