কালীঘাট থানার ওসি শান্তনু সিংহ বিশ্বাস। ছবি সংগৃহীত।
পুলিশ দিবসের আগেই কার্যত শুরু হয়ে গেল পুলিশকল্যাণ পর্ষদ বা ওয়েলফেয়ার বোর্ডের কাজ। তবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর পুলিশ দিবসের দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন বলে খবর। কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের কল্যাণ পর্ষদের নোডাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে কালীঘাট থানার ওসি শান্তনু সিংহ বিশ্বাসকে। ইন্সপেক্টর পদের এই অফিসার রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহলের ‘আস্থাভাজন’ হিসেবেই পুলিশ মহলে পরিচিত। স্বরাষ্ট্র দফতরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের কমিটির মধ্যে সমন্বয় সাধনও করবেন এই নোডাল অফিসার।
পুলিশ বাহিনীতে বঞ্চনা ও নানান অভিযোগের চোরাস্রোত দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। কিন্তু করোনা আবহে তার বারবার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কলকাতার পুলিশ ট্রেনিং স্কুল এবং সল্টলেকে সশস্ত্র বাহিনীর অফিসে রাতে বিক্ষোভ থামাতে পদস্থ অফিসারেরা গিয়েছিলেন। কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে যেতে হয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে। তার পরেই পুলিশকর্মী ও তাঁদের পরিবারের জন্য এই পর্ষদ গড়া হয়। মূলত রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের নিচু ও মাঝারি তলার পুলিশকর্মীদের নানান অভাব-অভিযোগ শোনা ও তার সমাধান করাই এই পর্ষদের কাজ হবে।
প্রসঙ্গত, সামনের বছর বিধানসভা ভোট। অনেকেই মনে করছেন, বাহিনীর অভাব-অভিযোগ যাতে বিক্ষোভের চেহারা না নেয় তাই এই পর্ষদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাজ্য সরকার ‘আস্থাভাজন’ হিসেবে পরিচিত অফিসারকেই নিয়োগ করেছে। সূত্রের দাবি, কলকাতা পুলিশের কমব্যাট বাহিনীতে যে বিক্ষোভ হয়েছিল তা প্রশমন করতেও শান্তনুবাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি তা নির্ভরযোগ্য ভাবে পালনও করেছেন।
আরও পড়ুন: রাজ্যের ক্ষমতা কমল চতুর্থ পর্বের আনলকে, লকডাউনে নতুন রাশ
সূত্রের খবর, নোডাল অফিসার ছাড়াও পর্ষদে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের দু’জন করে মোট ৪ জন প্রতিনিধি থাকবেন। শান্তনুবাবু-সহ মোট পাঁচ জন এ দিন নবান্নে ডিজির সঙ্গে দেখা করেন। পর্ষদের প্রতিনিধিদের অফিস ও গাড়ি-সহ প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো বরাদ্দ করা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের ব্যাখ্যা, যে হেতু নিচু ও মাঝারি তলার কর্মীদের জন্য এই
পর্ষদ গড়া হয়েছে তাই পর্ষদের সদস্য হিসেবে এই স্তরের কর্মীদেরই রাখা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের যে সাত সদস্যের কমিটি তৈরি হয়েছে তার আহ্বায়ক হয়েছেন তপনকুমার মাইতি নামে এক সাব-ইন্সপেক্টর। সদস্য হিসেবে রয়েছেন এক জন কনস্টেবলও। প্রতি জেলা এবং ইউনিটেও এমন কমিটি তৈরি হবে। পরবর্তী কালে অবশ্য উপদেষ্টা হিসেবে পদস্থ কোনও আধিকারিককে নিয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশের একাংশ।
আরও পড়ুন: ভিন্ন ধর্মে বিয়ে, বিবাহিত তরুণীকে বাড়ি ফেরার ‘চাপ’ পুলিশের
পুলিশ সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ দিবসের অনুষ্ঠানে এ সব বলার পাশাপাশি পুলিশের প্রতি কিছু নির্দেশও দিতে পারেন। তবে সে দিনের অনুষ্ঠান পুরোটাই হবে ভিডিয়ো-মাধ্যমে। শীর্ষ পদস্থ অফিসারদের কে কে কোন কোন দফতর থেকে ভিডিয়ো মাধ্যমে যোগ দেবেন তার তালিকাও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ বার লকডাউন
পরিস্থিতির জন্য সার্বিক ভাবে কোনও অনুষ্ঠান হবে না। বিভিন্ন জেলা, কমিশনারেট নিজেদের মতো করে কিছু অনুষ্ঠান করতে পারে।