প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা দেশের মধ্যে সব চেয়ে বেশি। জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) এই তথ্য সামনে আসার পরে বাংলায় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে নতুন করে পথে নামার ভাবনা শুরু করল বিজেপি।
দেশ জুড়ে বিভিন্ন জেলে কত সংখ্যক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী আটক, তার একটি তথ্য সম্প্রতি প্রকাশ করেছে এনসিআরবি। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত গোটা দেশে ১ হাজার ৪০৩ জন বাংলাদেশি গ্রেফতার হয়েছেন। তার মধ্যে কেবল পশ্চিমবঙ্গেই ১ হাজার ২৮৪ জন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর, এনসিআরবি-র এই তথ্যকেই এ বার রাজনৈতিক ভাবে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে এ কথাই আমরা বলার চেষ্টা করছিলাম। এ রাজ্যের শাসক দল অনুপ্রবেশকারীদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে দেখে। ফলে পশ্চিমবঙ্গও অনুপ্রবেশকারীদের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। এ জন্যই এনআরসি-র দাবি তুলেছি। আবার তুলব।’’
আরও সুর চড়িয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের দাবি, ‘‘ত্রিপুরা, অসমও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্য। কিন্তু সেখানে রাজ্য সরকার অনুপ্রবেশকারীদের সাহায্য করে না। একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই এ ঘটনা ঘটে। রিপোর্টেও সে কথাই স্পষ্ট।’’
তৃণমূল অবশ্য বিষয়টিকে ঠেলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখা কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব। অনুপ্রবেশ বন্ধ করাও তাদের কাজ।’’ পার্থবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি প্রচার করার চেষ্টা করছে যে, তৃণমূল অনুপ্রবেশকারীদের মদত দিচ্ছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এনআরসি করে বিজেপি রাজ্যের ভিতরে বিভেদ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা তা কখনওই হতে দেব না।’’
লোকসভা ভোট-পর্বে এনআরসি-কে সামনে রেখেই রাজ্যে প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, এনআরসিকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণে বিজেপি অনেকটাই সফল হয়েছিল বাংলায়। ১৮টি আসনও পেয়েছিল। কিন্তু অসমে জাতীয় পঞ্জির পরে যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে ‘মুসলিম বাংলাদেশি’ অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা খুব বেশি নয়। বরং সিংহ ভাগই হিন্দু। ফলে বাংলায় বিজেপির অস্ত্র বুমেরাং হয়ে গিয়েছে বলে বিজেপিরই একাংশের বক্তব্য। যে কারণে পুজোর আগে রাজ্যে এসে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলে গিয়েছিলেন, এনআরসি নয়, প্রচার করতে হবে নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী বিল নিয়ে।
রাজ্য বিজেপির একাংশের বক্তব্য, এনসিআরবি-র তথ্য নতুন করে বিজেপিকে এনআরসি প্রচারে অক্সিজেন দেবে।