ঠাকুরমার ঝুলির পাঠ এ বার স্কুলে স্কুলে

সূত্রের খবর প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, স্কুলে মাসে অন্তত একটি করে গল্পের আসর বসাতে হবে। প্রয়োজনে স্কুলগুলি প্রতি সপ্তাহেও তা করতে পারে। যেখানে পড়ুয়ারা গল্প পড়ে এসে শোনাবে অথবা শুনবে। পূর্ব বর্ধমানের জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) খগেন রায় জানান, বিতর্ক সভা-সহ এই ধরনের কার্যকলাপ স্কুলগুলিতে করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুল পরিদর্শনের সময় সেই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৮ ০৪:১৩
Share:

পাক ধরা চুল, ক্ষীণদৃষ্টি, অশক্ত শরীর অথচ তীক্ষ্ণ স্মৃতিশক্তি নিয়ে মধ্যমণি হয়ে বসে রয়েছেন ঠাকুরমা। সামনে ভিড় জমিয়েছে খুদের দল। ঠাকুরমা ঝুলি থেকে বের করছেন একের পর এক রাজ রাজাদের গল্প। কোনওটা শেখায় নির্ভীকতা, কোনওটা নৈতিকতা।

Advertisement

অতীতের এই রেওয়াজ ইদানীং কমেছে। পাঠ্যক্রম ও প্রতিযোগিতার চাপে ছোটরা আজ বড়ই ব্যস্ত। কিন্তু গল্প শোনা এবং সেটাকে বলা ও লেখার মধ্যে দিয়ে পড়ুয়াদের যে সার্বিক উন্নতি হয় তা উপলব্ধি করতে পেরেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। তাই কয়েক মাস আগে জেলা সফরে গিয়ে দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটি জানায়, পাঠ্যক্রমের বাইরেও বিতর্কসভা এবং গল্পের আসরের প্রতি পড়ুয়াদের ঝোঁক বাড়াতে হবে। সেই পথেই এগোচ্ছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতর।

সূত্রের খবর প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, স্কুলে মাসে অন্তত একটি করে গল্পের আসর বসাতে হবে। প্রয়োজনে স্কুলগুলি প্রতি সপ্তাহেও তা করতে পারে। যেখানে পড়ুয়ারা গল্প পড়ে এসে শোনাবে অথবা শুনবে। পূর্ব বর্ধমানের জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) খগেন রায় জানান, বিতর্ক সভা-সহ এই ধরনের কার্যকলাপ স্কুলগুলিতে করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুল পরিদর্শনের সময় সেই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এটি একটি ভাল উদ্যোগ। ইদানীং গল্প বলার সংস্কৃতি কমে গিয়েছে। কারও সময় নেই। সকলে গল্প বলতেও পারেন না। অথচ ছোটদের গল্প শোনালে কিন্তু তারা সব ছেড়ে বসে পড়ে। আমার নাতনিকে দেখেই সেটা বুঝতে পারি। গল্প ছোটদের কল্পনার জগৎ তৈরি করতে সাহায্য করে।’’ কয়েক মাস আগে জেলা পরিদর্শনে গিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটি। তখন পড়ুয়াদের গল্প বলা, পড়া ও শোনার অভ্যাস তৈরির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মুর্শিদাবাদের ডিআই (মাধ্যমিক) পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্কুল যে পত্রিকা প্রকাশ করে তাতেও যেন পড়ুয়ারা সক্রিয় ভাবে অংশ নেয়। পরবর্তী বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।’’ কলকাতার সর্বশিক্ষা মিশনের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের কল্পনা শক্তি, অনুভূতি, শব্দচয়ন, আত্মবিশ্বাস ও পরিবেশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গেলে গল্পের কোনও বিকল্প নেই। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’’

প্রশ্ন উঠেছে, পাঠ্যক্রমের চাপ সামলে কী ভাবে গল্পের আসর সম্ভব? শিক্ষক নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘গল্পের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়লে পড়ুয়াদের সার্বিক উন্নতি হবে। যে ভাবে হোক আমাদের তা করতেই হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement