Asansol RSS office

মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পরেই হানা, এ বার নোটিসও গেল আরএসএস দফতরে, কী কী নথি চাওয়া হল?

আসানসোল পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাউথ ধাদকার জেসি বোস লেনে আরএসএস ভবনটি রয়েছে। ওই তিন তলা ভবনটি পুকুর ভরাট করে তৈরি হয়েছে বলে মমতা অভিযোগ করার পরেই সরকারি আধিকারিকেরা সেখানে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে উত্তেজনা ছড়ায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ ১৪:৪৮
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের পরেই আরএসএস দফতরে সরকারি নোটিস। —নিজস্ব চিত্র।

বেআইনি ভাবে জমি দখল, পুকুর ভরাট করে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে বৃহস্পতিবার কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই মুখ্যমন্ত্রী জানান যে, তিনি শুনেছেন, আসানসোলের আরএসএস দফতর পুকুর ভরাট করে তৈরি হয়েছে। তাঁর এই মন্তব্যের পরেই আরএসএসের ওই দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। পুলিশ, আসানসোল পুরসভা ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকদের একটি দল সেখানে গিয়ে জমির নথিপত্র দেখতে চেয়েছিল। এর পর শুক্রবার নোটিসও পৌঁছে গেল। নোটিসে জানানো হয়েছে, আগামী সাত দিনের মধ্যে জমি-বাড়ির প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে পুরসভার কাছে।

Advertisement

আসানসোল পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাউথ ধাদকার জেসি বোস লেনে আরএসএস ভবনটি রয়েছে। ওই তিনতলা ভবনটি পুকুর ভরাট করে তৈরি হয়েছে বলে মমতা অভিযোগ করার পরেই সরকারি আধিকারিকেরা সেখানে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন আরএসএস কর্মীরা। আরএসএস সূত্রে খবর, তাঁদের কাছে জমিবাড়ির কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। তারাও জানিয়েছে, যদি নোটিস দেওয়া হয়, তা হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেই সব নথি প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেই মতোই নোটিস ধরানো হয়েছে বলে জানান আসানসোল পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায়। চিঠির প্রতিলিপি আসানসোল উত্তর থানা এবং ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরেও পাঠানো হয়েছে। নথি হিসেবে চাওয়া হয়েছে জমি কেনার দলিল, জমির চরিত্র বদলের নথি, আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের অনুমোদনের কাগজ (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট), পাশ হওয়া বাড়ির নকশা এবং আসানসোল পুরসভার হোল্ডিং ট্যাক্সের কাগজ।

মেয়র বলেন, ‘‘সাত দিনের মধ্যে সমস্ত নথি জমা দিতে হবে। নথি জমা দিতে না পারলে আইন অনুযায়ী যা ব্যবস্থা হয়, তা পুর নিগমের পক্ষ থেকে নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ভেঙে দেওয়া হবে। তৃণমূলের একটি অফিস ছিল আসানসোল সার্কিট হাউসের পাশে জিটি রোডের ধারে। আমরা সেটাও ভেঙে দিয়েছি। অর্থাৎ, এই ক্ষেত্রে দলমতনির্বিশেষে কাজ হবে।’’

Advertisement

আরএসএসের আইনজীবী পীযূষকান্তি গোস্বামী বলেন, ‘‘আসানসোল পুরনিগম থেকে একটি নোটিস শুক্রবার দফতরে দিয়েছে। সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে সম্ভবত সমস্ত নথি জোগাড় করা সম্ভব হয়ে উঠবে না। তাই কম করে ১৫ দিনের ভিতরে আমরা সমস্ত নথি জমা করে দেব। ওই এলাকার পুরনো বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, ওখানে কোনও পুকুর বা জলাশয় ছিল না। ফাঁকা মাঠ ছিল। ছেলেমেয়েরা এখানে খেলাধুলো করত।’’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘মলয় (মন্ত্রী মলয় ঘটক) আমাকে বলছিল যে, আসানসোলে একটা পুকুর বুজিয়ে কোনও একটা রাজনৈতিক দল একটা তিন তলা বাড়ি বানিয়েছে। কিন্তু সেটা ভাঙা হচ্ছে না কেন? পুলিশকে নাকি বার বার বলা হয়েছিল, পুলিশ অ্যাকশন নেয়নি। কারণ, শুনেছি ওই বাড়িটা আরএসএসের কার্যালয়। তৃণমূলের কোনও বেআইনি নির্মাণ যদি ভাঙা হয়, তা হলে আরএসএসের কার্যালয় কেন ভাঙা হবে না?” এর পর মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন, ‘‘আগে দেখতে হবে ওই জমির রেকর্ড কী আছে? যদি ওটা জলাশয় জমি হয় মানে ল্যান্ড রেকর্ডে যদি তা-ই থাকে, তা হলে সেই জলাশয় বুজিয়ে কার্যালয় তৈরি তো অপরাধ। সেই মতো ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু আগে ভাল করে রেকর্ড দেখে নিতে হবে। কারও মুখের কথায় কিছু হবে না।” তার পরেই আরএসএস দফতরে হাজির হয়েছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement