তৃণমূল যদিও এ নিয়ে চিন্তিত নয় বলেই জানিয়েছে। — ফাইল চিত্র।
নাম সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস হলেও আর জাতীয় দলের গুরুত্ব মিলবে না বাংলার শাসকদলের। সোমবারই সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে সোমবার থেকে তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া কোনও রাজ্যের আঞ্চলিক দলও নয়। কারণ, দলের সর্বশেষ সাফল্যের খতিয়ান বলছে, আগে রাজ্য দল থাকলেও অরুণাচল প্রদেশ এবং মণিপুরে আর সেই শক্তি নেই তৃণমূলের।
২০১১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী বাংলায় রাজ্য দলের মর্যাদা ছিল তৃণমূলের। এ ছাড়াও ২০০৯ সালের অরুণাচল বিধানসভা, ২০১২ সালের মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে ওই দুই প্রদেশে রাজ্য দল হয়ে যায় তারা। এর পরে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী ত্রিপুরাতেও রাজ্য দলের মর্যাদা পায় তৃণমূল। চারটি প্রদেশে রাজ্য দলের মর্যাদার শর্তপূরণ করাতেই মেলে জাতীয় দলের তকমা। ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর সেই স্বীকৃতি দিলেও কমিশন জানিয়েছিল তৃণমূলের জাতীয় দলের তকমা ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই কার্যকর।
কমিশন তৃণমূলকে যে চিঠি পাঠিয়েছে, তার তৃতীয় অনুচ্ছেদে বলা রয়েছে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে অরুণাচল প্রদেশে রাজ্য দলের মর্যাদা খোয়ায় তৃণমূল। কিন্তু যে হেতু দলকে ২০১৪ থেকেই জাতীয় দলের তকমা দেওয়া ছিল, তাই কোনও বদল আনা হয়নি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ৩৪টি আসনে জিতলেও তৃণমূল যে রাজ্য দলের মর্যাদা পাওয়া অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর এবং ত্রিপুরায় একটিও আসন পায়নি, তা-ও তালিকা দিয়ে জানিয়েছে কমিশন। একই সঙ্গে ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই চার রাজ্যের কোথায় কত শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল, সেই তথ্যও দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের নিরিখে তৃণমূল অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর এবং ত্রিপুরায় একটিও আসন না পেলেও ভোটে লড়েছিল। দল ভোট পায় যথাক্রমে প্রদত্ত ভোটের ১.৫৫ শতাংশ, ৩.৭৫ শতাংশ এবং ৯.৭৪ শতাংশ। তবে বাংলায় ভোট প্রাপ্তি ছিল ৩৯.৭৯ শতাংশ।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের তথ্য দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরা ছাড়া কোথাও ভোটে লড়েনি তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গে দল ৪৩.২৮ শতাংশ ভোট পেলেও ত্রিপুরায় পেয়েছিল ০.৪০ শতাংশ ভোট।
এমনই সব তথ্য হাজির করে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, তৃণমূল আর অরুণাচল প্রদেশ ও মণিপুরের রাজ্য দল নয়। আর তার জেরেই জাতীয় দলও নয়।