ফাইল ছবি
মতুয়া-ক্ষোভে এ বার বার্তা দিলীপ ঘোষেরও। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘শুধু মতুয়ারা নন, বিজেপি আমলে সবাই নাগরিকত্ব পাবেন। সিএএ করতে অনেক সময় লেগেছে। আপনাদের আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। বিজেপি কাজটা করছে।’’ সঙ্গে বলেন, ‘‘বাংলায় প্রায় তিন কোটি মানুষ আছেন, যাঁরা পূর্ববঙ্গ থেকে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কথার উপর ভরসা রেখে তাঁরা বিজেপি-কে ভোট দিয়েছেন। অর্ধেক কাজ হয়েছে। অর্ধেক হয়নি। তার জন্য সময় দিতে হবে। একমাত্র বিজেপি-ই পারবে এই কাজ করতে।’’
কয়েক দিন আগেই রাজ্য বিজেপি-র পদাধিকারী মণ্ডলী ও জেলা সভাপতিদের মধ্যে মতুয়া প্রতিনিধি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর-সহ দলের বেশ কয়েক জন বিধায়ক। সেই ক্ষোভের আগুন এখনও প্রশমিত হয়নি। এরই মধ্যে রবিবার মতুয়া মহাসঙ্ঘের বৈঠকে ফের সিএএ কার্যকর করার দাবি নিয়ে সক্রিয় হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে দু’য়ে মিলে বেশ বিড়ম্বনায় রাজ্য বিজেপি।
রবিবারই সঙ্ঘের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হওয়ার পরই রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘আগামী লোকসভা ভোটের আগে সিএএ কার্যকর হয়ে যাবে।’’ সোমবার একই সুর শোনা গেল প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গলায়।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের আগে প্রচারে ঠাকুরনগরে এসে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, করোনার টিকাকরণের পরেই নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হবে। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লোকসভায় সুর পাল্টে বলেন, এই মুহূর্তে সিএএ বিধি প্রয়োগ করা হবে না। এর পরই ক্ষোভ জমতে শুরু করে মতুয়া নেতৃত্বের মধ্যে।
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু, মহাসঙ্ঘাধিপতি তথা গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, বনগাঁ উত্তর ও রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া ও মুকুটমণি অধিকারী এবং মহাসঙ্ঘের পদাধিকারীরা। সেই বৈঠকে আবার সিএএ নিয়ে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর দলের অবস্থানকেই তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা ওঁদের (শান্তনু) কোনও পরিকল্পনা বা চাল হতে পারে আরও বড় জায়গা পাওয়ার জন্য। বিজেপি আইন করেছে। তারা নাগরিকত্ব দেবে বলেছিল। কেন দিতে পারেনি, তা ওরাই বলতে পারবে। মতুয়ারা এ দেশের নাগরিক। তাঁরা ভোট দেন। নতুন করে তাঁদের নাগরিকত্বের প্রয়োজন নেই।’’