বিধানসভার বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা।
বর্ষায় বন্ধ চা বাগানের দুর্গত শ্রমিকদের জন্য পাঁচ হাজার ত্রিপলের আর্জি জানিয়ে বিধানসভার স্পিকারকে চিঠি লিখেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। যার জেরে এ বার আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত বিধানসভার বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গার।
২০১৬ সালে চা বাগান অধ্যুষিত মাদারিহাট বিধানসভা থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন মনোজ। যে মাদারিহাটে ২০টিরও বেশি বাগান রয়েছে। মনোজের অভিযোগ, এর মধ্যে পাঁচটি বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের দুর্দশা সবচেয়ে বেশি। বাগানের আবাসনগুলির বেশির ভাগেরই ভগ্নদশা অবস্থা। একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। বাগান বন্ধ হওয়ায় সেই আবাসনগুলোর সংস্কারেও কারও কোনও উদ্যোগ নেই।
বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘বছরের পর বছর ধরে মাদারিহাটের বন্ধ চা বাগানগুলোর শ্রমিকদের এই দুর্দশা চলছে। বর্ষা এলেই তাঁদের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। কিন্তু বিধায়ক কোটায় আমরা মাত্র ৫০০ ত্রিপল পাই। যা দিয়ে বন্ধ বাগানের এত শ্রমিকের এই দুর্ভোগ মেটানো সম্ভব নয়। সেজন্যই জেলা প্রশাসনের কাছে ৫ হাজার ত্রিপল চাই। কিন্তু জেলা প্রশাসন তা না দেওয়ায় বিধানসভার স্পিকারের দ্বারস্থ হই। এরপর বিধানসভার সচিব বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনকে চিঠি দেন। তার পরও প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের দ্বারস্থ হই। এখনও ত্রিপল দেওয়া হয়নি।’’
মনোজের কথায়, ‘‘বর্ষার মরসুম শেষ হয়ে গেলে শ্রমিকদের ত্রিপল আর কাজে দেবে না। এটা বারবার বলা সত্ত্বেও জেলা প্রশাসনের কর্তারা বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করে চলছেন। সেজন্যই এবার বিষয়টি নিয়ে সরাসরি রাজ্যপালের দ্বারস্থ হব বলে ঠিক করেছি।’’
বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি তিনি।
এদিকে, মনোজের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের সভাপতি মোহন শর্মা পাল্টা বলেন, ‘‘মানুষের ভোটে মনোজ টিগ্গা ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন। তাঁকে জেতাতে আলিপুরদুয়ারে এসে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী চা বাগান নিয়ে বড় বড় ভাষণ দিয়েছেন। তারপরও মনোজ যদি মাত্র ৫ হাজার ত্রিপল জোগাড় করতে না পারেন, তাহলে তাঁর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত।’’ মোহনের অভিযোগ, আসলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক।