ছবি: সংগৃহীত
সারা দেশে ১৫০টি ট্রেন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। তার মধ্যে রয়েছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের এলাকাও। রেল সূত্রের খবর, এখানে দু’টি ট্রেন আইআরসিটিসি এবং বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আপত্তি জানাতে শুরু করেছে রেলের সংগঠনগুলি। তাঁদের দাবি, বেসরকারিকরণের পথে হাঁটার মানেই রেল থেকে চাকরির সুযোগ কমতে থাকা।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের দু’টি ট্রেন, গুয়াহাটি-মুম্বই এবং গুয়াহাটি-তিরুঅনন্তপুরম এক্সপ্রেস আপাতত বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চালানো হবে বলে দাবি রেল সূত্রের। তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দু’টি ট্রেনই অসম থেকে উত্তরবঙ্গ হয়ে যাতায়াত করে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘এখনও রেলমন্ত্রক বা রেলবোর্ডের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক চিঠি আসেনি আমাদের কাছে। তবে দুটি ট্রেন নতুন কায়দায় চালানোর কথা। এই ধরনের ট্রেনে যাত্রী সুবিধা অনেকটাই বেশি থাকবে।’’ আইআরসিটিসির তরফেও একই দাবি করা হয়েছে।
রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ওই ট্রেনগুলিতে সময়ানুবর্তিতা এবং পরিচ্ছন্নতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ট্রেনের কামরায় বাড়তি সহায়করাও থাকবেন যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার জন্য। তাঁরা জানান, কিছুদিন আগে রেলবোর্ডের নির্দেশে নয়াদিল্লি-লখনউ রুটে ‘তেজস’ নামে একটি ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চালিয়েছিল আইআরসিটিসি। তাতে মুনাফার সম্ভাবনা দেখে একই ভাবে আরও ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেল। তবে তার জন্য বাড়তি ভাড়া যাত্রীদের গুণতে হবে কিনা তা এখনও সুনিশ্চিত করেনি রেলকর্তারা। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তাদের দাবি, রেলবোর্ডের তরফে চিঠি এলে সেসব খতিয়ে দেখা হবে। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই মডেলে কোনও যাত্রী পরিষেবায় অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে প্রমাণ হলে তাঁদের ভাড়া আংশিক বা পুরো ফেরত দেওয়ার বিধানও রয়েছে।
রেলে বেসরকারিকরণ নিয়ে গত কয়েকমাস ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে রেল কর্মচারীদের সংগঠনগুলি। রেল পরিষেবার বেসরকারিকরণের খবরে নতুন করে অসন্তোষ দেখা গিয়েছে তাদের মধ্যে। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের এনজেপির নেতা ভাস্কর তর বলেন, ‘‘রেলের এরকম পদক্ষেপের বরাবর বিরোধিতা করে এসেছে আমাদের সংগঠন। এরকম হলে চাকরির সুযোগ ক্রমাগত হারাতে থাকবে কর্মীরা।’’ উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মজদুর ইউনিয়নের তরফেও প্রায় একই দাবি করা হয়েছে। সংগঠনের এনজেপি শাখার সম্পাদক সৌম্যদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমাদের সর্বভারতীয় স্তরের মূল সংগঠন অল ইন্ডিয়া রেলওয়ে মেন্স ফেডারেশনের তরফেও বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে। আগামী ২-৭ জানুয়ারি প্রতিবাদ কর্মসূচি চলবে। রেল বেসরকারি হাতে দিলে আমরা ধর্মঘটের পথেও যেতে পারি।’’ রেল সূত্রে ইঙ্গিত, সব ঠিক থাকলে ওই ট্রেন চলতে এখনও তিন-চার মাস সময় বাকি।