কলেজের হস্টেলে মিলল দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে রাজগঞ্জ ব্লকের ফাটাপুকুর সংলগ্ন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ হস্টেলে। পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মঘাতী বিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্রের নাম প্রবীণকুমার কৈরালা (২১)। তিনি সিকিমের সিনতাম এলাকার বাসিন্দা। রাতেই তাঁর ঘর থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পাওয়া গিয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। তা দেখে পুলিশের অনুমান, ওই ছাত্র সম্ভবত আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই তা স্পষ্ট হবে।
জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ছাত্রটি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সুইসাইড নোটে তিনি তাঁর মা, বাবা এবং ওই কলেজের পড়ুয়া এক ছাত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছে। ঘটনার পিছনে প্রেমের কোনও ঘটনা রয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে। পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।” এদিন ভোররাতে কলেজে আসেন প্রবীণকুমারের বাবা অবসরপ্রাপ্ত বনাধিকারিক মদনকুমার কৈরালা এবং কাকা হরিশ্চন্দ্র কৈরালা। হরিশ্চন্দ্রবাবু বলেন, “কেন প্রবীণ এমন করল তা বুঝতে পারছি না। ও কোনও সময় কোনও সমস্যার কথা জানায়নি।”
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১ এপ্রিল থেকে কলেজে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। গত ১ মার্চ থেকে কলেজ ছুটি দেওয়া হয়েছিল। কয়েকজন ছাত্র পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য হস্টেলে থেকে যান। প্রবীণকুমার তাঁদের একজন। ওইদিন রাতের খাওয়ার আগে হস্টেলে প্রার্থনা হয়। শুক্রবার ওই ছাত্রকে সেখানে তাঁর সহপাঠীরা দেখেননি। এমনকি, তিনি রাতে খেতেও যায়নি। খাওয়া শেষ করে অন্য ছেলেরা ঘরে ফিরে সিলিং ফ্যানে প্রবীণের ঝুলন্ত দেহ দেখে হইচই শুরু করেন।
কলেজের অধ্যক্ষ চেরিয়ান পডিয়ারা বলেন, “ছেলেটি লেখাপড়ায় খুব একটা ভাল না হলেও মিশুকে ছিল। ভাল গিটার বাজাত। কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিত। বুঝতে পারছি না কেমন করে এটা হল।” প্রবীণের সহপাঠীদের কয়েকজন জানান, প্রবীণ সম্প্রতি ক্লাসের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। গত শুক্রবার তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। বিকেলে মোবাইল ফোনে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। সন্ধ্যা থেকে তিনি মনমরা ছিল। কারও সঙ্গে বেশি কথা বলেননি। প্রার্থনা ও খেতেও যায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, কলেজ হস্টেলের ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে।