হাঁসফাঁস গরমে স্বস্তি আধ ঘণ্টার ঝড়-বৃষ্টিতে

টানা দাবদাহের পরে খানিকটা স্বস্তি দিল আধ ঘণ্টারও কম সময়ের ঝড়-বৃষ্টি। ঝড়ের তুলনায় বৃষ্টি হয়েছে সামান্য। তবে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ায় উত্তরবঙ্গ জুড়ে তাপমাত্রা কমেছে। রবিবার বৃষ্টিতে স্বস্তি মিললেও ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশ কিছু এলাকায়। রবিবার সন্ধ্যায় ঝড়ে ফুলবাড়ি এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়। হাইটেনশনের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩৫
Share:

গোটা দক্ষিণবঙ্গ যখন গরমে হাঁসফাস করছে, তখন হঠাৎ বৃষ্টি শিলিগুড়ি শহরে। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

টানা দাবদাহের পরে খানিকটা স্বস্তি দিল আধ ঘণ্টারও কম সময়ের ঝড়-বৃষ্টি। ঝড়ের তুলনায় বৃষ্টি হয়েছে সামান্য। তবে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ায় উত্তরবঙ্গ জুড়ে তাপমাত্রা কমেছে। রবিবার বৃষ্টিতে স্বস্তি মিললেও ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশ কিছু এলাকায়। রবিবার সন্ধ্যায় ঝড়ে ফুলবাড়ি এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়। হাইটেনশনের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফুলবাড়িতে শিলিগুড়ি পুরসভার পানীয় জলের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাই আজ সোমবার সকালে পুর এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা অনিশ্চিত। বিদ্যুৎ বিপর্যস্ত কোচবিহারেও। রাত পর্যন্ত অন্ধকারে ডুবে থাকে কোচবিহার শহর। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া এলাকায় ঝড়ে কয়েকটি গাছ পড়ে শহরের বিদ্যুৎ সরবারহের কয়েকটি তার ছিঁড়ে পড়ায়, গভীর রাত পর্যন্ত কিছু এলাকায় লোডশেডিং ছিল।

Advertisement

দাবদাহ চলছিল গত কয়েকদিন ধরেই। কোচবিহার ও জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছে পৌঁছে যায়। শিলিগুড়িতে তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। গরমের কারণে উত্তরবঙ্গের প্রাথমিক স্কুলগুলিও সকালে শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে গরমে নানা রোগ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতরে সর্তকতা জারি করা হয়। জলপাইগুড়িতে ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যকর্মীদেরও। এই পরিস্থিতিতে রবিবার সন্ধ্যায় পশ্চিমী ঝঞ্ঝার হাত ধরে স্বস্তি এল উত্তরবঙ্গে। ঝড়ে কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ক্ষয়-ক্ষতি হলেও, দাবদাহ থেকে স্বস্তি মেলায় বাসিন্দারা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে শিলিগুড়ি শহরে। নিমিষেই ধুলোয় ঢেকে যায়, হিলকার্ট রোড, সেবক রোড। বেশ কিছুক্ষণ ঝড় চলার পরের শুরু হয় বৃষ্টি। এক পশলা বৃষ্টি চলার পরে অবশ্য ঝড়-বৃষ্টি থেমে যায়। তবে রাত পর্যন্ত হাওয়ার দাপট চলতে থাকে। শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “ঝড়ে বৈদ্যুতিক লাইনের ক্ষতি হয়ে ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ সংযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাতে সোমবার সকালে পানীয় জল সরবরাহ করা সম্ভব নাও হতে পারে। বিদ্যুৎ লাইন ঠিক করতে কাজ চলছে। জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা চলছে।” আজ সোম এবং মঙ্গলবার কাওয়াখালিতে মতুয়াদের উত্তরবঙ্গ সম্মেলনের জন্য বড় প্যান্ডেল করা হয়েছিল। ঝড়ে তা লন্ডভন্ড হয়ে যায়।

জলপাইগুড়িতেও রবিবার সন্ধ্যায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়। বিকালের পর ডুয়ার্সের কালো মেঘ ঘনাতে শুরু করে। সন্ধ্যায় নাগরাকাটা, লুকসানে একটানা আধ ঘন্টা বৃষ্টি হয়। তার কিছু পড়ে বৃষ্টি নামে মালবাজার ব্লকের ওদলাবাড়ি, মালবাজারে। গরুবাথানে ঝান্ডিডারা, নিমবস্তি এলাকায় শিলা বৃষ্টি হয়ে যায়। স্বস্তি ফিরেছে চা শিল্প মহলেও। টানা দাবদাহ এবং বৃষ্টির অভাবে চা গাছে রোগ পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছিল বলে চা বাগান কর্তৃপক্ষ জানান। ইসলামপুরেও বৃষ্টি হয়েছে। চোপড়া, গোয়ালপোখর বিস্তীর্ণ এলাকাতেও বেশ কিছুক্ষণ ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছে। ইসলামপুরের মহকুমা শাসক নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “এখন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত তা জানা যায়নি। বিডিওদের বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।” ঝড়ে ইসলামপুর শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন ইসলামপুর কলেজ হস্টেলের আবাসিকরা। হস্টেলের রান্না ঘর সহ বেশ কয়েকটি ঘরের টিনের চাল উড়ে যাওয়ায়, খাওয়ার নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে হস্টেল সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement