জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশ ছাড়া পোশাকের রং পাল্টানোর অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামলেন অস্থায়ী মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন ব্লকের শতাধিক অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মী ওই বিষয়ে কথা বলতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে যান। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কথা বলতে অস্বীকার করেন, এই অভিযোগ তুলে বিকেল নাগাদ তাঁরা স্বাস্থ্য ভবনের অলিন্দে অবস্থানে বসেন। বিকেলের পরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দফতর ছেড়ে যান। স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিযোগ, প্রায় চার ঘণ্টা অবস্থান চললেও স্বাস্থ্য কর্তাদের কেউ দেখা করতে সেখানে যাননি জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকার বলেন, “আন্দোলনের কথা শুনেছি। কিন্তু সরকার নির্ধারিত পোশাক পরতে হবে। অন্য জেলাগুলিতে তো পরছে। এখানে তো পৃথক কিছু হবে না।”
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, “আমি ওই বিষয়ে একটি কথাও বলব না। স্বাস্থ্য ভবন থেকে পোশাক পাঠানো হয়। প্রয়োজনে সেখানে কথা বলুন।”
অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মীদের পক্ষে সুইটি সাহা বলেন, “আমরা পোশাকের রং পরিবর্তন মেনে নেব না, তা বলছি না। বিষয়টি নিয়ে সরকারি নির্দেশ কী রয়েছে, সেটা জানতে চেয়েছি। কিন্তু জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কথা বলতে অস্বীকার করেন। বাধ্য হয়ে অবস্থানে বসি। এর পরেও কেউ কথা বলতে আসেনি।”
এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মীদের পোশাকের রং ঘিরে বিতর্ক শুধুমাত্র কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় সীমাবদ্ধ। রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতে কোন সমস্যা নেই। স্বাস্থ্য ভবন থেকে যে পোশাক পাঠানো হয় সেটাই তাঁরা ব্যবহার করছেন। যদিও আন্দোলনকারী অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মীরা স্বাস্থ্য আধিকারিকের ওই দাবি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ৪২৩ জন অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মী ৫৩৭টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে কাজ করেন। ওই অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশ্ন, ‘ড্রেস কোড’ ঠিক করে দিয়ে ২০০৯ সালে তাঁদের কমলা রঙের শাড়ি পড়তে বলা হয়। কয়েক দিন আগে বলা হয়েছে, এখন থেকে হলুদ শাড়ি পড়তে হবে। এটা কেন হবে? তাঁরা ওই বিষয়ে সরকারি নির্দেশ দেখানোর দাবি তোলেন। এ দিন বিকেল অবধি কোনও স্বাস্থ্য কর্তা তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন না দেখে, তাঁরা সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ নিজেরা আলোচনায় বসে এদিনের মতো আন্দোলন তুলে নেন। সুইটি দেবী বলেন, “আমরা আলোচনায় বসে অবস্থান আন্দোলন তুলে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সরকারি নির্দেশ না দেখানো পর্যন্ত নতুন রঙের পোশাক কেউ পরবে না।”