প্রায় দেড় কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সাসপেন্ড’ হওয়ার রেজিস্ট্রার দিলীপ সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের রিপোর্ট অবশেষে কর্মসমিতিতে পেশ হতে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে, আজ, মঙ্গলবার কর্মসমিতির বৈঠকে ওই রিপোর্ট পেশ করে তা নিয়ে আলোচনা হবে। প্রসঙ্গত, মাটিগাড়া থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ওই ব্যাপারে একটি আর্থিক দুর্নীতির মামলা দায়ের হয়েছে ২০১০ সালের ৩০ মার্চ। সেই মামলায় দিলীপবাবু সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে পুলিশ। এবার বিভাগীয় তদন্তের রিপোর্টে কী মত দেওয়া হয়েছে তা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে কৌতুহল তুঙ্গে। উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ বলেন, “দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বিভাগীয় তদন্তের রিপোর্ট মঙ্গলবার কর্মসমিতির সভায় পেশ করা হবে। সেই রিপোর্ট আলোচনা করে বিদি মেনে পদক্ষেপ করা হবে।”
বিধি অনুযায়ী, ওই রিপোর্টে নয়ছয়ের স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে বলে তদন্তকারী অফিসার মত প্রকাশ করে থাকলে প্রথমে দিলীপবাবুর কাছে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হতে পারে। সেই উত্তর পাওয়ার পরে কর্মসমিতি পদক্ষেপ করতে পারে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসারদের একাংশ জানান। অতীতে দিলীপবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম মনোভাবাপন্ন সংগঠনের অনেকেই। বাম আমলে পুলিশের অভিযোগ দায়ের হলেও চার্জশিট কিন্তু পেশ হয়নি। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হলেও চার্জশিট পেশ হয়নি বলে জানতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরে তড়িঘড়ি চার্জশিট দেয় পুলিশ।
ঘটনাচক্রে, সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাম আমলে গড়িমসির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন বর্তমান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তদানীন্তন শিলিগুড়ির পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর গৌতম দেবও। বাম আমলের মামলায় তৃণমূল জমানায় চার্জশিট হয়েছে। এখন বিভাগীয় তদন্ত রিপোর্টে কলিঙ্গ ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির আইন বিভাগের প্রধান নির্মল কুমার চক্রবর্তী কী রিপোর্ট দিয়েছেন সেটাই দেখার।