সভাস্থল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে তৈরি হচ্ছে হেলিপ্যাড। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
সীমান্তঘেঁষা এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর সভা। জরুরি অবস্থাতে বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে ঢুকে পড়তে পারে কপ্টার। সেই সম্ভাবনা এড়াতে বদলানো হল হেলিপ্যাডের জন্য বাছাই করা জায়গা। তবে বিষয়টি নিয়ে কোচবিহারের জেলাশাসক বা জেলা পুলিশ সুপার কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
আগামী ৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কোচবিহারের সীমান্তবর্তী শহর দিনহাটায় পৌঁছবেন। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দিনহাটার নয়ারহাটের ডাকুয়ারহাটে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিটমহল লাগোয়া ডাকুয়ারহাটের সভাস্থলে হেলিকপ্টারে যাতায়াতের কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সেই মতো সভাস্থলের পাশেই হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়। হেলিপ্যাডের দু’কিলোমিটারের মধ্যে আর্ন্তজাতিক সীমান্ত রয়েছে জেনে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসারেরা আপত্তি জানান। এর পরে সোমবার রাতেই শুরু হয় নতুন হেলিপ্যাডের খোঁজ। পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষও।
সভাস্থল থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে গোবড়াছড়া লাগোয়া রসামন্তা এলাকায় নতুন হেলিপ্যাড তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপযুক্ত মাঠ না খুঁজে না পাওয়ায় দিনকয়েক আগে ফসল কেটে নেওয়া পরিত্যক্ত অপেক্ষাকৃত শক্ত মাটির জমি খুঁজে সেখানেই হেলিপ্যাডের জায়গা চূড়ান্ত করা হয়। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কোনরকম বিতর্ক তৈরির আশঙ্কার ঝুঁকি না রেখে বাড়তি সর্তকতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে হেলিপ্যাডের জায়গা বদল করা হয়েছে। নতুন হেলিপ্যাড থেকে সভাস্থল ও সীমান্ত দুইয়েরই দূরত্ব বেশি।” দিনহাটার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অসীম নন্দী জানিয়েছেন, বুধবারের মধ্যে রসামন্তা এলাকায় নতুন হেলিপ্যাড তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সভাস্থল লাগোয়া এলাকা থেকে করলা, পোয়াতেরকুঠি, বাকালিরছড়া প্রভৃতি ছিটমহল ৫ কিলোমিটার দূূরত্বে রয়েছে। স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল সংসদে অনুমোদনের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী কোনও বার্তা দিতে পারেন সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখে প্রত্যন্ত এলাকায় সভা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটির তরফে করা সমীক্ষা রিপোর্ট কোচবিহার জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত জানান, ছিটমহল বিনিময় হলে কত সংখ্যক বাসিন্দা ঠিকানা বদলাতে আগ্রহী তা জানতে সমীক্ষা হয়। তাতে ৭৩৪ জন ভারতীয় ছিটের বাসিন্দা দেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। বাংলাদেশের ছিটগুলির বাসিন্দাদের সবাই ভারতের সঙ্গে থাকতে চেয়েছেন বলে ওই রিপোর্ট জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারে দিনহাটায় পৌঁছনোর কথা রয়েছে। সেখান থেকে সড়কপথে সভায় যাবেন তিনি।