সিপিএমের হাতছাড়া হল পঞ্চায়েত সমিতি

ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএমের হাতছাড়া হল। মঙ্গলবার সভাপতি পদের জন্য ভোটগ্রহণে জিতে সমিতি দখল করেছে তৃণমূল। ওই ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী দীপিকা ওঁরাও সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। যদিও অনাস্থা ভোটকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যে সিপিএম নেতৃত্ব হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০০
Share:

ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএমের হাতছাড়া হল। মঙ্গলবার সভাপতি পদের জন্য ভোটগ্রহণে জিতে সমিতি দখল করেছে তৃণমূল। ওই ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী দীপিকা ওঁরাও সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। যদিও অনাস্থা ভোটকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যে সিপিএম নেতৃত্ব হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এ দিন সভাপতি নির্বাচনের পরে তাই প্রশাসনের তরফে বিষয়টি ভোটাভুটিতে হাজির প্রতিটি সদস্যকে জানিয়ে দিয়ে লিখিত সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে আদালতের নতুন নির্দেশ এলে সেটা প্রত্যেকে মেনে চলবেন। ধূপগুড়ির বিডিও সৌমেন্দু দুতরাজ বলেন, “সভাপতি নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতির ৪৫ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। তৃণমূল প্রার্থী ২৪ ভোট এবং বিরোধী প্রার্থী ২১ ভোট পান। তৃণমূলের প্রার্থী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তবে অনাস্থা ভোটকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা রুজুর ঘটনা সদস্যদের জানিয়ে বলা হয়েছে, পরে আদালতের যা নির্দেশ আসবে সেটা মেনে চলা হবে। ওই বিষয়ে লিখিত সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

Advertisement

তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী এদিন ধূপগুড়িতে ছিলেন। তিনি বলেন, “ধারাবাহিক কুত্‌সার জবাব পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনের মাধ্যমে দিয়েছি। মানুষ আমাদের পাশে আছেন। সমস্ত নিয়ম মেনে অনাস্থা এনে পঞ্চায়েত সমিতি দখল করা হয়েছে। এর পরে আইনি প্রশ্ন উঠলে আমরাও আইনের পথে যাব।”

পঞ্চায়েত সমিতি হাত ছাড়া হওয়ার পরে দলীয় কৌশল ঠিক করতে এদিন সন্ধ্যায় জরুরি আলোচনায় বসেন সিপিএমের ধূপগুড়ি জোনাল কমিটি। কমিটির সম্পাদক তুষার বসু বলেন, “সভায় আলোচনার পরে যা বলার বলব।” যদিও দলের জোনাল কমিটির অন্যতম সদস্য সঞ্জিত দে জানান, দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ ছাড়া অনাস্থা আনা যায় না। এক্ষেত্রে কোন নিয়ম মানা হয়নি। দলের যে ৪ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, ওঁদের সদস্যপদ খারিজেরও আবেদন আদালতে করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

Advertisement

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪৮ আসনের ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ২৪টি আসন সিপিএমের দখলে ছিল। তৃণমূল ছিল ১৬টি আসনে। কংগ্রেস ৫টিতে এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ৩টি আসনে। সিপিএমের একজন সদস্য চাকরি পেয়ে সদস্য পদে ইস্তফা দেন। ফলে সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২৩টি। এর পরে দলের ৪জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সিপিএমের শক্তি কমে হয় ১৯টি।

এদিকে কংগ্রেসের ৩ জন এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ২ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা ১৬টি থেকে বেড়ে হয় ২৫টি। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ওই শক্তি নিয়ে তৃণমূল অনাস্থা ভোটে সিপিএমকে ধরাশায়ী করে। এর পরেই সিপিএম নেতৃত্ব অনাস্থা ভোটের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। আগামী ২৮ অক্টোবর ওই মামলার শুনানি হবে।

এদিকে সম্প্রতি তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ায় ওই দলের সদস্য কমে হয় ২৪টি। এদিনের সভাপতি নির্বাচনে তৃণমূলের ওই সদস্যরা হাজির থাকলেও সিপিএমের আরও ১ জন সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁদের ১৮ জন সদস্য ভোটে অংশ নেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে দীপিকা ওঁরাও-এর নাম সভাপতি পদের জন্য প্রস্তাব করা হয়। বিপক্ষে কংগ্রেসের দেবরাজ লামাকে সিপিএম এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা সমর্থন করে ভোটাভুটিতে দীপিকা ওঁরাও ২৪ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন। তৃণমূলের জেলা সভাপতির অভিযোগ, “কংগ্রেস এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সঙ্গে জোট করেও সিপিএম শেষ রক্ষা করতে পারেনি। তাই দিশেহারা হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement