সিপিএম-তৃণমূলের সংঘর্ষে আহত আট

ভোট কার্যত শান্তিতে কাটলেও ভোটের পর রাজনৈতিক সংঘর্ষ অব্যহত মালদহে। তৃণমূল-সিপিএমের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার অভিযোগকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার বাখরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের শবদলপুর এলাকা। রবিবার সকাল থেকে দুই পক্ষের গোলমালে বোমা বাজি, গুলি-সহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ। সিপিএমের এক গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যর বাড়ি ও পাঁচ জন তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করা ছাড়া লুঠপাট হয়েছে বলে পুলিশ অভিযোগ পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩১
Share:

ভোট কার্যত শান্তিতে কাটলেও ভোটের পর রাজনৈতিক সংঘর্ষ অব্যহত মালদহে।

Advertisement

তৃণমূল-সিপিএমের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার অভিযোগকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার বাখরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের শবদলপুর এলাকা। রবিবার সকাল থেকে দুই পক্ষের গোলমালে বোমা বাজি, গুলি-সহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ। সিপিএমের এক গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যর বাড়ি ও পাঁচ জন তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করা ছাড়া লুঠপাট হয়েছে বলে পুলিশ অভিযোগ পেয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় গুলিতে কেউ জখম না হলেও বোমার আঘাতে ও হাঁসুয়ার কোপে জখম হন ৮ জন। তাদের মধ্যে ৬ তৃণমূল কর্মীকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

ভোটের পর দিনই মানিকচকের লস্করপুরে চায়ের দোকানে হামলায় মৃত্যু হয় তৃণমূল কংগ্রেসের এক জন নির্বাচনী এজেন্টের। সিপিএম ওই হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ওই রাতেই বৈষ্ণবনগরের চন্দ্রনারায়ণপুরে দুই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমাবাজি করা ছাড়াও ভাঙচুর সহ লুঠপাটের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এর এক দিন বাদেই ফের বৈষ্ণবনগরের শবদলপুরে এই গোলমালের জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ চার জনকে আটক করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতেরা হলেন ভৈরব প্রামাণিক, অসীম প্রামাণিক, ক্ষুদিরাম প্রামাণিক, শ্রীদাম সিংহ, উদয়ন সিংহ ও জাবেদ সিংহ। প্রত্যেকেই তৃণমূল কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। অভিযোগ, বন্দুকের বাঁট দিয়ে মেরে ভৈরবের মাথা ফাঁটিয়ে দেওয়া হয়। শ্রীদাম ও উদয়ন সিংহের হাতে ও পিঠে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো হয়েছে। বাকিদের বোমার টুকরোয় মুখে আর পায়ে আঘাত লেগেছে। বোমার আঘাতে দুই সিপিএম কর্মী জখম হয়েছে বলে দলের তরফে দাবি করা হলেও তাদের কাউকে অবশ্য হাসপাতালে পাওয়া যায়নি।

এই দিন সকালে কুম্ভিরা বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ৬ তৃণমূল কর্মী। ওই সময় জনা ৫০ সিপিএম কর্মী তাদের ঘিরে ধরে। প্রথমে ভৈরব প্রামাণিকের উপর চড়াও হয়ে তাকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে মেরে মাথা ফাঁটিয়ে দেওয়া হয়। শুরু করে বোমাবাজি।

সিপিএমের পাল্টা অভিযোগ, প্রথমে তৃণমূল কর্মীরাই বাখরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য চন্দনা সিংহের বাড়িতে চড়াও হয়ে ছাদে উঠে বোমাবাজি করে। ওই পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী তথা বিড়ি সরবরাহের ঠিকাদার জয় সিংহের ব্যবসার জিনিস লুঠপাট করা হয়। তা দেখে এলাকার সিপিএম কর্মীরা বাঁধা দেয়। জয় সিংহ বলেন, “ভোটের আগে থেকেই ওরা এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। এ দিন আমার বাড়িতে হামলার পর সিপিএম কর্মীরা ছুটে আসতেই ওরা পালায়। রাস্তায় কী হয়েছে জানি না।” মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ভৈরবের পাল্টা অভিযোগ, “লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সিপিএম কর্মীরা কয়েকজনকে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছিল। এদিন হামলা চালায়। এখন হামলার গল্প ফাঁদা হচ্ছে।” তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “ভোটের পর সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে আমাদের কর্মীর উপর হামলা চলছে। কমিশন কী করছে বুঝছি না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement