তৃণমূলের দলত্যাগী টাউন ব্লক সভাপতি জ্যোতিপ্রসাদ রায়কে কাছে টানতে আসরে নেমে পড়ল কংগ্রেস ও বিজেপি। অন্য দিকে, দল ছাড়া নেতাকে বুঝিয়ে ঘরে ফেরানোর শেষ চেষ্টা করেও শূন্য হাতে ফিরতে হল তৃণমূল সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মনকে।
রবিবার রাত থেকে সোমবার দিনভর এমন টানাটানিতে কিছুটা বিব্রত হলেও জ্যোতিপ্রসাদবাবু কংগ্রেস অথবা বিজেপি কোনও পক্ষকে সবুজ সঙ্কেত দেননি। ‘ঘরে ফেরা’র অনুরোধ নিয়ে রবিবার রাতে তাঁর কামারপাড়ার বাড়িতে বিজয়বাবু গেলে তিনি জানিয়ে দেন, সিদ্ধান্ত পাল্টে ঘরে ফেরা সম্ভব নয়।
তৃণমূল সাংসদ বলেন, “আমি জ্যোতিপ্রসাদবাবুর সঙ্গে দেখা করে অভিমান ভুলে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছি। বলেছি তাঁকে দল চায়। কিন্তু তিনি জানান, সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ানো অসম্ভব।” রবিবার রাতে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় জ্যোতিপ্রসাদবাবুর সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল সাংসদ। সৌজন্য রক্ষায় কথাও বলেন জ্যোতিপ্রসাদবাবু।
রবিবার দুপুরে দলত্যাগের কথা ঘোষণা করেন জ্যোতিপ্রসাদবাবু। এর পরে দলের প্রদেশ সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী সাংসদ এবং রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনায় বসতে অনুরোধ করেন। রাতে সাংসদ তাঁর বাড়িতে যান। কিন্তু লাভ হয়নি। যার ফলে কিছুটা হতাশ কল্যাণবাবু। তিনি বলেন, “কোনও কর্মী বা নেতা ছেড়ে চলে গেলে খারাপ লাগে। ছেলেটা প্রথম দিন থেকে দলে ছিল।”
মদন মিত্র গ্রেফতারের পরে দলনেত্রীর নির্দেশে পথে নেমে অভিযুক্তের পক্ষে সওয়াল করা এবং আদালতে তৃণমূল সমর্থক আইনজীবীদের একাংশের আচরণকে সমর্থন করতে পারেননি জ্যোতিপ্রসাদবাবু। রবিবারই সে কথা জানিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ ছিল, পুরনো কর্মীদের ব্রাত্য করে কংগ্রেস ও সিপিএম ছেড়ে আসা লোকজনকে দলে বিশেষ আসন দেওয়া হয়েছে। তোপ দেগেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “ক্লোজড্ চ্যাপ্টার। একটি কথাও বলব না।”
তবে তৃণমূল শিবিরে ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ’ হলেও কংগ্রেস এবং বিজেপি- দুই দল থেকেই ফোনে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। বিজেপির জেলা সম্পাদক বাপি গোস্বামী বলেন, জ্যোতিপ্রসাদবাবুর সঙ্গে কিছু আলোচনা হয়েছে। তাঁকে দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।” সোমবার জ্য্যোতিপ্রকাশবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার এবং দলের বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা। নির্মলবাবু বলেন, “দলের তরফে আমি এবং বিধায়ক ওঁর সঙ্গে কথা বলেছি। প্রস্তাব রেখেছি।” তবে জ্যোতিপ্রসাদবাবু বলেন, “প্রত্যেকের কথা শুনছি। আমার কিছু ঘনিষ্ঠ লোকজন আছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।”