বিজেপির সভায় সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। রয়েছেন দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া (বাঁ দিকে) এবং দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। শুক্রবার শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
পুরভোটের ‘প্রস্তুতি’ সভায় বিজেপি-তে যোগ দিলেন ডান-বাম দলের এক ঝাঁক যুব এবং মহিলা নেতা কর্মী। তার পরেই উজ্জীবিত বিজেপি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ স্লোগানকে সামনে রেখে ‘স্বচ্ছ বাংলা’ গড়ার ডাক দিলেন। শুক্রবার শিলিগুড়ির সভায় বিজেপি-র কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা জানান, আসন্ন শিলিগুড়ি পুরভোটে জয় নিশ্চিত করে ওই অভিযানের সূচনা হবে। তাঁদের দাবি, ‘স্বচ্ছ শিলিগুড়ি’ গড়ে যে অভিযানের সূচনা হবে তা ক্রমান্বয়ে ‘স্বচ্ছ কলকাতা’ তৈরির পরে ‘স্বচ্ছ বাংলা’ গড়বে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানের ডাক দিয়েছেন। আমরা রাজ্যে ‘স্বচ্ছ বাংলা’ অভিযানও শুরু করছি। ‘স্বচ্ছ নবান্ন’ অভিযানও হবে। স্বচ্ছ শিলিগুড়ি গড়েই স্বচ্ছ বাংলা অভিযান শুরু হবে।” বিজেপি-র কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহের ঘোষণা, “রাজ্য বিধানসভা দখলের ‘প্রথম পদক্ষেপ’ হল শিলিগুড়ি পুরভোটে জেতা। তারপরে আমাদের লক্ষ্য রাজ্য বিধানসভা ভোট।”
বিজেপি-র দাবি, তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএমের শতাধিক নেতাকর্মী এ দিন তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন। তালিকায় আছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের ঘনিষ্ঠ যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর অরোরা, জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিলিগুড়ি পুরসভার বিদায়ী ডেপুটি মেয়র সবিতা দেবী অগ্রবাল, দার্জিলিং যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী, জেলা ছাত্র পরিষদ সভাপতি অমিত তালুকদারও। তৃণমূল ও কংগ্রেসের আইনজীবী সেলের কিছু নেতা-নেত্রীও বিজেপি-তে যোগ দেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক জন বাম নেতা-কর্মীও এ দিন তাঁদের দলে এসেছেন বলে বিজেপি নেতাদের দাবি। দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া নিজেই এ দিনের দল বদলের তদারকি করেছেন।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদান করা নিয়ে একদা গৌতমবাবুর ঘনিষ্ঠ দীপঙ্করের উত্তর, “এই দলটার একটা সুষ্ঠু নীতি এবং উন্নয়নের ভাবনা রয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলে মর্যাদা পাননি। তিনি বলেন, “সরকারি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেও অনেকে টাকা তোলেন বলে দেখেছি।” সরকারি এবং দলের নানা অনুষ্ঠানে মন্ত্রী গৌতমবাবুর সঙ্গে দীপঙ্করকে দেখাও যেত। তবে গৌতমবাবুর দাবি, দীপঙ্কর দলের কোনও পদাধিকারী ছিলেন না। তাঁর বক্তব্য, “কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকতেই পারে। কিন্তু দীপঙ্কর দলের কোনও দায়িত্বে ছিল না। তাই এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করব না।”
অভিজিৎবাবু জানান, শিলিগুড়ি বিধানসভার যুব কংগ্রেস সভাপতি কানহাইয়া পাঠক-সহ ২৬ জন নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অভিজিৎ বলেন, “দার্জিলিঙের সাংসদ যে ভাবে উন্নয়নের কাজ করছেন তা দৃষ্টান্তযোগ্য। সেই উন্নয়নের কাজে সাহায্য করতেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।” নেতা-কর্মীদের দলত্যাগে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে দাবি করেছেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শঙ্করবাবু। তাঁর কথায়, “যাঁরা অকৃতজ্ঞ, তাঁরাই দল ছেড়ে গিয়েছে।”