খোদ বিদায়ী মন্ত্রী গৌতম দেবের বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটের মুখে টাকা উড়ছে বলে বেশ কয়েকদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল। শুক্রবার সেখানেই একলপ্তে ২২ লক্ষ টাকা উদ্ধার ও এক বাংলাদেশি-সহ দু’জনকে গ্রেফতারের পর সেই অভিযোগ মান্যতা পেল বলেই দাবি তুলেছেন বিরোধীরা।
এ দিন বেলা তিনটে নাগাদ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এলাকার একটি বাড়িতে হানা দেয় শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ। সেখান থেকেই মেলে ওই টাকা। গ্রেফতার করা হয়েছে বিমল সরকার নামে এলাকার এক বাসিন্দা ও কার সঙ্গী ত্রিনাথ সরকার নামে বাংলাদেশের এক বাসিন্দাকে।
পুলিশের দাবি, জেরায় তারা জানিয়েছে তারা জমি কেনাবেচা-সহ আরও নানা কারবারের সঙ্গে জড়িত। ঘটনাচক্রে, এ দিন বাসুদেব সরকারের নেতৃত্বে গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারেররা যে বাড়িটিতে অভিযান চালান সেখানেই সপ্তাহখানেক আগে এক কোটি টাকা রাখা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এ দিন উদ্ধার হওয়া টাকায় ১০০০ টাকার নোটে ১৩ লক্ষ টাকা ছিল। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘ধৃত দু’জনকে জেরা করে কী উদ্দেশ্যে কোথা থেকে টাকা এসেছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। বাকি টাকা কোথায় গিয়েছে তাও দেখা হচ্ছে। ’’ আজ, শনিবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির করানো হবে।
টাকা উদ্ধারকে সামনে রেখেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। শিলিগুড়ির সিপিএম প্রার্থী তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য গোটা ঘটনা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘হুমকি দিয়ে, টাকা ছড়িয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না। মানুষ সব প্রলোভন উপেক্ষা করে ওদের পরাস্ত করবে। আশা করি, নির্বাচন কমিশন ভোটে টাকা ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’’ ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী দিলীপ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা তো বারবারই বলছি যথেচ্ছ টাকা ওড়ানো হচ্ছে। পর্যবেক্ষকেরা যদি একটু কড়া নজর রাখেন তাহলে অনেক কিছুই সামনে চলে আসবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যে দু’জনকে ধরা হয়েছে তাদের মোবাইলের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখা হোক।’’ তবে বিরোধীদের অভিযোগকে আমল দিতে চাননি বিদায়ী মন্ত্রী তথা ওই কেন্দ্রের প্রার্থী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘বিশদে তদন্ত করে কারা কী উদ্দেশ্যে এটা করেছে তা পুলিশ বের করুক। তদন্ত শেষের আগে যারা হইচই করছে, তাদের নিয়ে কিছু বলার নেই।’’