মালখান ফস্কাল কী করে, বিতর্ক পুলিশেই

হাতে এসেও কেএলও জঙ্গি মালখান সিংহ ফস্কে যাওয়ায় পরই ভুলের মাসুল নিয়ে জেলা পুলিশের মধ্যেই চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, কাদের ভুলে মালখান হাতের নাগালে এসেও ফস্কে গিয়েছে তা নিয়ে জেলা পুলিশের কর্মী অফিসারেরা একে অপরকে দোষারোপ করতে শুরু করেছেন। কী ভাবে পুলিশের হাত থেকে মালখান সিংহ ফসকে গিয়েছে তা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জানতে চেয়েছেন মালদহ রেঞ্জের ডিআইজি সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩৩
Share:

হাতে এসেও কেএলও জঙ্গি মালখান সিংহ ফস্কে যাওয়ায় পরই ভুলের মাসুল নিয়ে জেলা পুলিশের মধ্যেই চাপান-উতোর শুরু হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, কাদের ভুলে মালখান হাতের নাগালে এসেও ফস্কে গিয়েছে তা নিয়ে জেলা পুলিশের কর্মী অফিসারেরা একে অপরকে দোষারোপ করতে শুরু করেছেন। কী ভাবে পুলিশের হাত থেকে মালখান সিংহ ফসকে গিয়েছে তা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জানতে চেয়েছেন মালদহ রেঞ্জের ডিআইজি সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এই প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এ দিন জেলা পুলিশ সুপার কোনও সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করেননি। কারও ফোনও ধরেননি। তবে ডিআইজি (মালদহ রেঞ্জ) সত্যজিৎ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “মালখান সিংহকে ধরতে গিয়ে পুলিশের যে ত্রুটি বিচ্যুতি হয়েছে তা শুধরে নিতে হবে। নিজেদের বিশ্লেষণ করতে হবে, ফের যাতে এ ধরনের ভুল যেন না হয়।”

রবিবার রাতে গাজলের ফতেপুর গ্রাম থেকে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে মালখান সিংহ কোথায় আত্মগোপন করেছে ৪৮ ঘণ্টা পরেও তার হদিশ এখনও পুলিশ করতে পারেনি। জেলা পুলিশের কোনও কর্তা বলছেন, “পুলিশের তাড়া খেয়ে মালখান সিংহ মালদহ থেকে কাটিহার হয়ে ফের নেপালে চলে গিয়েছে।” কোন কর্তা আবার বলছেন, “মালখান সিংহ মালদহেই আছে।” তবে এ ব্যাপারে জেলার পুলিশের কয়েকজন কর্তা বলেন, “মালখান সিংহ অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ও বুদ্ধিমান। ওর সঙ্গে সচরাচর খোঁজ মেলে না। ১৫ দিন পর পর খোঁজ মেলে। এখন ও কোথায় গা ঢাকা দিয়ে আছে তার কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না।”

Advertisement

গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে হবিবপুরের কালীপুরের কাছে মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কের উপর একটি যাত্রী বোঝাই বাসে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল মালখান সিংহ ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। সেই বাসে গুলি চালানোর অভিযোগে পুলিশ ২৯ ডিসেম্বর কেপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সুভাষ বর্মন ও কেপিপির হবিবপুর ব্লক সভাপতি ফলেন বর্মন-সহ ১০ জনকে পুলিশ ধরে। বাসে গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হলেও পুলিশ ৯০ দিনের মধ্যে গুলি চালানোর ঘটনায় আদালতে চার্জশিট জমা দিতে পারেনি। তার ফলস্বরূপ মঙ্গলবার কেপিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সুভাষ বর্মন জামিনে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যান। শনিবার জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন কেপিপি নেতা ফলেন বর্মন।

এ দিন জেল থেকে বার হয়ে কেপিপি নেতা সুভাষ বর্মন অভিযোগ করেছেন, “পুলিশের ভুলে মালখান সিংহ ফস্কে পালিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশই গল্প ফেঁদেছে। মালখান সিংহ পুলিশের হাত থেকে ফস্কে যায়নি। পুলিশই মালখান সিংহকে পালাতে সাহায্য করেছে। মালখান সিংহ ধরা পরলে অনেক নেতা, মন্ত্রী ও পুলিশ অফিসারদের পর্দা ফাঁস হয়ে যাবে। সেই কারনে পুলিশ রাজনৈতিক চাপে ইচ্ছাকৃতভাবে মালখান সিংহকে হাতের নাগালে পেয়েও ছেড়ে দিচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, কেপিপিকে ধ্বংস করার জন্য পুলিশ মালখান সিংহকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

কেপিপি নেতা সুভাষ বর্মনের তোলা অভিযোগের প্রসঙ্গে ডিআইজি (মালদহ রেঞ্জ) বলেন, “উনি কী ভাবে জেল থেকেই জেনে গেলেন মালখান সিংহকে পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দিয়েছে? এতো অবাক বিষয়। আমি এর কোনও জবাব দিতে চাই না। শুধু বলব, মালখান সিংহকে ধরতে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী গাজল, হবিবপুর ও বামনগোলায় তল্লাশি চালাচ্ছে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার মালখান সিংহ পালানোর সময় একটি ছোট ব্যাগ ফেলে পালিয়েছিল। পুলিশ ব্যাগটি উদ্ধার করেছে। ওই ব্যাগে মালখান সিংহের কয়েকটি জামাকাপড় ও লুঙ্গি ছিল। পাশাপাশি ব্যাগে পাসপোর্ট সাইজের কয়েকটি মালখান সিংহের ছবি পাওয়া গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement