মেট্রো চেয়ে চিঠি এ বার রেলমন্ত্রীকে

শিলিগুড়িতে কেন মেট্রো রেলের দাবি উঠছে তার ব্যাখ্যা দিয়ে চিঠি পাঠানো হল খোদ রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর কাছে। শিলিগুড়ি পুরসভার ২ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান তথা দার্জিলিং জেলার কংগ্রেস নেতা সুজয় ঘটক সোমবার নিউ জলপাইগুড়ির সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথি শীলের মাধ্যমে রেলমন্ত্রীর কাছে ওই চিঠি পাঠিয়েছেন।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

রেলমন্ত্রীকে লেখা কংগ্রেস বরো চেয়ারম্যান সুজয় ঘটকের চিঠি।

শিলিগুড়িতে কেন মেট্রো রেলের দাবি উঠছে তার ব্যাখ্যা দিয়ে চিঠি পাঠানো হল খোদ রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর কাছে। শিলিগুড়ি পুরসভার ২ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান তথা দার্জিলিং জেলার কংগ্রেস নেতা সুজয় ঘটক সোমবার নিউ জলপাইগুড়ির সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথি শীলের মাধ্যমে রেলমন্ত্রীর কাছে ওই চিঠি পাঠিয়েছেন।

Advertisement

সুজয়বাবুর আর্জি, যে হেতু মেট্রো রেল তৈরি হওয়াটা অত্যন্ত সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ, তাই দ্রুত সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। তাতে মেট্রো রেল চালালে তা কী ভাবে লাভজনক হয়ে উঠতে পারে সেটাও স্পষ্ট হয়ে যাবে। রেলের তরফে সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার জানিয়েছেন, তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের এক কর্তা জানান, শিলিগুড়ি থেকে বাগডোগরা মেট্রোর চালুর জন্য যে দাবি উঠেছে সেই ব্যাপারে রেলের অন্দরেও নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরেই পদক্ষেপ করা হবে বলে ওই কর্তা জানিয়েছেন।

মেট্রো চালানোর পক্ষে সওয়াল করছেন শিলিগুড়ির নানা স্তরের মানুষ। যেমন শিলিগুড়ির প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র হরিসাধন ঘোষ মনে করেন, শহরে জনসংখ্যা ও রাস্তার অনুপাতের বিষয়টি দেখলে মেট্রো রেল, মনো রেল চালানো ছাড়া যানজট কমানোর অন্য কোনও উপায় নেই। প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি শহর বদলে গেল আমার চোখের সামনেই। এখন তো রাস্তায় বার হলে বেশির ভাগ সময়ই এগোনোর উপায় থাকে না। দমবন্ধ পরিস্থিতি হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। নীচে কেউ জায়গা ছাড়বেন না। তাই হয় মাথার ওপর দিয়ে না হলে মাটির তলার নিয়ে ট্রেন চালানোর কথা ভাবতে হবেই।’’ হরিসাধনবাবু জানান, তিনি দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার মাধ্যমে রেলমন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

Advertisement

শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা নান্টু পালও শহরের জনসংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে সেই প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, যে হেতু শিলিগুড়িতে কাজের সুযোগ বেশি সে জন্য জনবসতি বেড়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে যে ভাবে সাফারি পার্ক সহ নানা কর্মকাণ্ড হচ্ছে, সে জন্যও শহরে ভিড় বেড়ে চলেছে। নান্টুবাবু বলেন, ‘‘এটা তো ঠিকই, শহরে রাস্তা সম্প্রসারণের সুযোগ তুলনায় কম। তাই মনো রেল, মেট্রো রেলের কথা ভাবতেই হবে। কেন্দ্র এ সব নিয়ে ভাবে কি না সেটাই দেখার বিষয়।’’

তবে শিলিগুড়ি পুরসভার বরো চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেসের নেতা সুজয়বাবু মনে করেন, ওই দাবিতে গোটা শহরের জনমত একজোট হলে রেলকে নড়েচড়ে বসতেই হবে। সে জন্য প্রয়োজনে এনজেপি থেকে বাগডোগরা পর্যন্ত ঘুরে জনমত সংগঠিত করার পক্ষপাতি ওই কংগ্রেস নেতা। তবে দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠে সে কাজটা করা দরকার বলে তিনি মনে করেন। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি শহরের মানুষ রাজনৈতিক মত পার্থক্যের উপরে উঠে একজোট হওয়ায় কিন্তু প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ করা গিয়েছে। যানজটে শহরের সকলেই কমবেশি রোজ জেরবার হতে হয়। তাই মেট্রোর আওয়াজ তুললে তাতে সাড়া মিলবে।’’ এনজেপি থেকে বাগডোগরা পর্যন্ত যদি একই আওয়াজ ওঠে, তা হলে শিলিগুড়িতে মেট্রো রেলের কথা ভাবতে রেল একটা সময়ে বাধ্য হবে বলেও মত সুজয়বাবুর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement