এলাকার বাসিন্দা হিসাবে কারও শংসাপত্র দরকার হলে কাউন্সিলররা জনপ্রতিনিধি হিসাবে তা দিয়ে থাকেন। কিন্তু শিলিগুড়ি পুরসভায় ৩ সদস্যের প্রশাসক বোর্ড বসার পর কাউন্সিলররা পদে নেই। সে কারণে পুরসভার তরফে বাসিন্দাদের ওই শংসাপত্র সাময়িক ভাবে বরো কমিটির অফিসাররা দেবেন বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু বরো কমিটির অফিসারদের সেই এক্তিয়ার রয়েছে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া পুরসভার তরফে তাঁদের কোনও লিখিত নির্দেশও দেওয়া হয়নি। মৌখিক ভাবে সম্প্রতি পুর কমিশনার তাঁদের ওই নির্দেশ দিয়েছেন। তা নিয়ে পুরসভার কর্মী, আধিকারিকদের একাংশও প্রশ্ন তুলেছেন। বাসিন্দাদের অনেকেই তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। কেন না কাজের জায়গায় এ ধরনের শংসাপত্র গ্রহণযোগ্য না হলে পরবর্তীতে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলে তাঁদের অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, “কাউন্সিলররা পদে নেই। বাসিন্দাদের যাতে হয়রানি না হয়, সে জন্য কাউন্সিলররা যেমন তাঁদের শংসাপত্র দিতেন, বরো কমিটির অফিসাররা এখন সেই শংসাপত্র দেবেন। মৌখিক ভাবে তা সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের জানানো হয়েছে।” কিন্তু বরো কমিটির অফিসারদের সেই এক্তিয়ার রয়েছে কি? এ ব্যাপারে তিন সদস্যের প্রশাসক বোর্ডের অন্যতম সদস্য তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক পি টি শেরপা বলেন, “বাসিন্দাদের শংসাপত্র মহকুমাশাসক দেন। গেজেটেড অফিসাররাই ওই শংসাপত্র দিয়ে থাকেন। কাউন্সিলররা জনপ্রতিনিধি হিসাবে দিতেন। এখন তাঁরা নেই। বরো কমিটির অফিসাররা একটা পদে রয়েছেন। তাই প্রাথমিক ভাবে তাঁরা শংসাপত্র দিলে তা দেখিয়ে বাসিন্দারা মহকুমাশাসকের কাছ থেকে শংসাপত্র পেতে পারবেন।”
বাসিন্দারা অবশ্য কাউন্সিলরদের কাছ থেকে শংসাপত্র নিয়ে বিভিন্ন কাজের জায়গায় তা ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রেও বরো অফিসারদের শংসাপত্র নিয়ে সরাসরি কাজের জায়গায় অনেকেই জমা করছেন। এ ব্যাপারে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। বরো কমিটির অফিসারদের শংসাপত্র কতটা বৈধ তা নিয়ে প্রশ্ন তো রয়েইছে। তাঁরা এ ধরনের শংসাপত্র দিতে পারেন না বলেই জানি। এ ধরনের শংসাপত্রকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলে বাসিন্দারা বিপাকে পড়বেন।” তাঁর দাবি, এ সব সমস্যার কথা ভেবেই তাঁরা প্রশাসক বা প্রশাসক বোর্ড বসানোর পক্ষে ছিলেন না।
গত ১৮ অগস্ট শিলিগুড়ি পুরসভায় প্রশাসক বসে। নিয়ম মতো ওই দিন থেকে কাউন্সিলররা পদ থেকে সরে গিয়েছেন। সে কারণে তাঁরা শংসাপত্র দিতে পারছেন না।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, শংসাপত্র পেতে বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য আর কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তা ভাবা হচ্ছে। পুরসভার একটি সূত্র জানিয়েছে, সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ররাও ওই শংসাপত্র দিতে পারেন কি না, তা দেখা হচ্ছে। তা হলে বরো কমিটির অফিসারদের সঙ্গে তাঁরাও প্রাথমিক ভাবে বাসিন্দাদের শংসাপত্র দেওয়ার কাজ শুরু করবেন।
শিলিগুড়ি পুরসভার ৫টি বরোর মধ্যে ৪টিতে চুক্তির ভিত্তিতে বরো অফিসাররা রয়েছেন। ৪ নম্বর বরোর অফিসার মাস কয়েক আগে কাজ ছেড়ে দেওয়ায় পদটি ফাঁকা রয়েছে।