বৃষ্টির ঘাটতি, পোকার উপদ্রব বাড়ছে চা বলয়ে

ফি বছরই নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত অন্তত ৩ থেকে ৪ দিন বৃষ্টি হয়। অথচ এবার সেভাবে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। আর এরই জেরে সমস্যার মুখে ডুয়ার্সের চা বলয়ের অধিকাংশ এলাকা। পোকার উপদ্রব বাড়ছে চা গাছে। বেড়েছে রেড স্পাইডার বা লাল মাকড় প্রজাতির পোকা। যা চা গাছের পাতার রস শুষে পাতাকে লাল করে দেয়।

Advertisement

সব্যসাচী ঘোষ

মালবাজার শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৬
Share:

ফি বছরই নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত অন্তত ৩ থেকে ৪ দিন বৃষ্টি হয়। অথচ এবার সেভাবে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। আর এরই জেরে সমস্যার মুখে ডুয়ার্সের চা বলয়ের অধিকাংশ এলাকা।

Advertisement

পোকার উপদ্রব বাড়ছে চা গাছে। বেড়েছে রেড স্পাইডার বা লাল মাকড় প্রজাতির পোকা। যা চা গাছের পাতার রস শুষে পাতাকে লাল করে দেয়। সাধারণত মার্চের শুকনো আবহাওয়ায় এই পোকার সংক্রমণ বেশি হয়। কিন্তু, দিনের যথেষ্ট রোদের তাপ আর রাতের ঠান্ডার সঙ্গে বৃষ্টি না থাকায় ইতিমধ্যেই রেড স্পাইডার বা লাল মাকড় চা গাছে থাবা বসিয়েছে।

ধূলো, শুকনো আবহাওয়া আর অনাবৃষ্টি লাল মাকড়ের বেড়ে ওঠার পক্ষে অনুকূল। এ বছরে জানুয়ারিতেই লাল মাকড় চলে আসায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চা বাগান মালিকেরা। লাল মাকড়ের সঙ্গে চা গাছের পুরানো শত্রু লুপার কীটও চা গাছে হানা দিতে শুরু করেছে বলে ডুয়ার্সের বিভিন্ন বাগানের তরফে জানা গিয়েছে। সবুজ পাতা দ্রুত খেয়ে ফেলে লুপার। শীতে বৃষ্টি কমে গেলেই লুপার দ্রুত গাছে ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকেই এবার ডুয়ার্সে আর সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। সাধারণত রাজ্যের থেকে বর্ষা বিদায় নিলেও নিম্নচাপের প্রভাবে ডুয়ার্সে শীতকালেও বৃষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর সেই বৃষ্টিরও দেখা মেলেনি। মালবাজার ব্লকের গুরজংঝোরা চা বাগানের ম্যানেজার অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “শীতকালে প্রতি মাসে অন্তত দুই থেকে তিনদিন এক ইঞ্চির মত ভারী বৃষ্টির খুব দরকার। কিন্তু এবছর বৃষ্টির দেখা না মেলাতেই লাল মাকড় আগেই চলে এসেছে।”

মেটেলি ব্লকের ইনডং চা বাগানের ম্যানেজার তথা ইন্ডিয়ান টি প্ল্যানটেশনের ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান রজত দেবও উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “ডুয়ার্সে এবছরের মত শীতকালীন খরা আগে কখনও দেখিনি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে দ্রুত বৃষ্টি না হলে চা গাছ লাল হতে শুরু করে দেবে। ডুয়ার্সে নভেম্বরেও ভাল বৃষ্টি হয়, এ বছর তা না হওয়ায় গোড়া থেকেই আশঙ্কা ছিল। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। জানুয়ারি মাসেই লুপার ও লাল মাকড়কেও চা গাছে থাবা বসাতে আগে কখনও দেখিনি।”

১০ জানুয়ারিতে ডুয়ার্সের রানিচেরা চা বাগানে আয়োজিত টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার বার্ষিক সাধারণ সভাতেও ডুয়ার্সের আবহাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বৃষ্টির ঘাটতির কথা উল্লেখ করে সংস্থার সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীর ভট্টাচার্য জানান, চা শিল্পে কারিগরি দক্ষতার উপর আরও জোর দিতে হবে। আবহাওয়া প্রতিকূল হলেও কারিগরি দিক থেকেই তার মোকাবিলায় জোর দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement