দোকানপাট বন্ধ হলেই নিকষ অন্ধকারে ঢেকে যায় গোটা এলাকা। আলিপুরদুয়ারে নারায়ণ দে-র তোলা ছবি।
সন্ধ্যা নামতেই অন্ধকারে ছেয়ে যাচ্ছে ভারত-ভুটানের সীমান্ত শহর জয়গাঁর রাস্তা। বছর দুয়েক আগে জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে মহাত্মা গাঁধী রোডে কিছু পথবাতি লাগানো হয়। কয়েক মাস ধরে তাও জ্বলছে না বলে। ভারত ভুটানে এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সন্ধ্যার পর থেকে দোকান বাজার বন্ধ হলেই অন্ধকার বেড়ে যায়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শহরের পথবাতির বিল কে দেবে তা নিয়ে জটিলতার জেরে জয়গাঁ শহরের এই দশা বলে অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলাশাসক পৃথা সরকার বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা দেখব।”
সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী। তিনি বলেন, “জয়গাঁ শহরে পথবাতির ব্যবস্থা ছিল না। ২০১২-এ উন্নয়ন পর্ষদের তহবিলের টাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তায় পথবাতি লাগানো হয়। বেশ কয়েক মাস বিল দেওয়া হয়।” তিনি জানান, উন্নয়ন পর্ষদ থেকে মাসিক ১৮-২০ হাজার টাকা করে বিল দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। জয়গাঁ শহরের নানা ধরনের কর সংগ্রহ করে পঞ্চায়েত। বিষয়টি জয়গাঁ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে জানানো হয়েছিল। ব্যবসায়ী সংগঠনকে অনুরোধ করা হয়েছে পথবাতির বিল দেওয়ার জন্য। কেউ রাজি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে বিদ্যুতের সংযোগ আপাতত কেটে দেওয়া হয়েছে।
পথবাতি লাগানোর সময় বিল কে মেটাবে তা উন্নয়ন পর্ষদ ঠিক না করে কাজ করায় এ অবস্থা বলে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। জয়গাঁ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পাশাং দিকি শেরপা বলেন, “রাস্তায় পথবাতির ব্যবস্থার সময় পর্ষদ কর্তারা বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেনি। পঞ্চায়তে এলাকায় এত টাকা কর সংগ্রহ হয় না যে তা থেকে পথবাতির বিল দেওয়া যায়। কোনও একটা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।” বাসিন্দারা জানান, জয়গাঁ শহরে ঢোকার প্রধান সড়কেও পথবাতি নেই। নেতাচ্ সুভাষ রোড, বৌবাজার এলাকা অন্ধকার। দোকানপাট বন্ধ হলে রাস্তায় নেমে আসে ঘুটঘুটে অন্ধকার।
জয়গাঁ থানার ওসি রিংচেন লামা ভুটিয়া বলেন, “শহরে নানা ধরনের অপরাধ মূলক ঘটনা ঘটে। পথবাতি না জ্বলায় মাঝে মধ্যেই পুলিশকে সমস্যায় পড়তে হয়।” এই প্রসঙ্গে জয়গাঁ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারাণ সম্পাদক রামাশঙ্কর গুপ্ত বলেন, “ভুটানে সন্ধ্যা নামলেই জ্বলে ওঠে পথবাতি। অথচ ভারতের এই সীমান্ত শহরে সামান্য পথবাতি জ্বালানোর উদ্যোগ নেই কারও। জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদের তরফে বিদ্যুতের বিল দেওয়ার জন্য আমাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের পক্ষে এই খরচ নিয়মিত বহন সম্ভব নয়। জয়গাঁকে পুরসভা করে দিলে সমস্যা মিটতে পারে।”