শিলিগুড়িতে বামেদের ডাকা প্রতিবাদ মিছিল। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
রামঘাট শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির শিলান্যাস অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদীকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনায় রবিবার দলমত নির্বিশেষে শিলিগুড়িতে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছিল বামফ্রন্ট। যদিও সে মিছিলে বামফ্রন্টের শরিক নয়, এমন দলগুলির নেতা-কর্মীদের দেখা গেল না। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার সহ বাম শরিক দলগুলির নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা মিছিলে হেঁটেছেন। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশও মিছিলে সামিল হন বলে জানানো হয়েছে। বামফ্রন্টের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, দলমত নির্বিশেষে সকলে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানোও, কোনও দল বা ব্যক্তিতে চিঠি দিয়ে বা আলাদা ভাবে জানানো হয়নি।
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা কোনও দলকে আলাদাভাবে বলিনি। দলমত নির্বিশেষে সকলকেই সামিল হওয়ার আহ্বান করা হয়েছিল। কেউ না এলে সেটা তাদের বিষয়। এলাকার সাধারণ মানুষ যেভাবে সামিল হয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তা অভূতপূর্ব। ওই দিনের ঘটনার জন্য মন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে। সাধারণ বাসিন্দাদের নামে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।”
এ দিন মিছিলে ছিলেন মহানন্দ মণ্ডলও। গত ২৮ সেপ্টেম্বর বৈদ্যুতিক চুল্লি প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে মহানন্দবাবু এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে মন্ত্রীকে মারধর এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। জামিন অযোগ্য ধারায় তাঁদের নামে মামলা হয়। পুলিশ মহানন্দবাবুকে পরে গ্রেফতারও করে। ওই ঘটনায় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও হয়।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অবশ্য এ দিন বলেন, “কে কী বললেন বা মিছিল করলেন তা নিয়ে বিবৃতি দিতে চাই না। দশ লক্ষ মানুষের শহরে একটি মাত্র বৈদ্যুতিক চুল্লি থাকবে না আরেকটা দরকার সেটা ভাবা দরকার। আমরা উন্নয়ন চাই।” এ দিন বামেদের মিছিল নিয়ে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের অন্যতম কৃষ্ণ পাল বলেন, “যখন কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি বাসিন্দাদের সমর্থন থাকে না তখন তারা এ ভাবে দলমত নির্বিশেষের কথা বলে কর্মসূচি নেওয়া হয়।”
এ দিন শিলিগুড়ির রামঘাটের কাছে জলপাইমোড় থেকে দেশবন্ধুপাড়ায় ৪ নম্বর বরো অফিস পর্যন্ত মিছিল হয়। সর্বদল মিছিল বললেও, তা নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে অ-বাম দলগুলি। বিজেপি’র জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসুর অভিযোগ, “সব দলকে নিয়ে মিছিল করার ইচ্ছে বামেদের নেই। আমাদের কিছু জানানোই হয়নি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই মিছিল হয়েছে।” জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শঙ্কর মালাকার জানান, কোনও আলাপ আলোচনা ছাড়া নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে বামেরা এ দিন মিছিল করেছেন। তাই কংগ্রেস যায়নি। তা ছাড়া মিছিলের অনুমতি নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে বাম সংগঠনের তরফেই আবেদন করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। বামফ্রন্টের তরফে পুলিশে আবেদন করা হলেও সেখানে দলমত নির্বিশেষে মিছিলের কথাই বলা হয়েছিল বলে অশোকবাবুর দাবি।