বাগান থেকেই এক আম ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছিল ভুয়ো ব্যবসায়ী সেজে আমবাগান কিনতে আসা দুষ্কৃতীরা। মালদহের রতুয়ার পুখুরিয়া এলাকায় শনিবার সন্ধ্যায় ওই ঘটনার পরে মুক্তিপণ চেয়ে ফোনও এসেছিল ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে। তবে অপহরণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ধরা পড়ল চার অপহরণকারী। উদ্ধার হয়েছেন ওই ব্যবসায়ীও। চাঁচলের এসডিপিও পিনাকী রঞ্জন দাস বলেন, “মুক্তিপণ আদায় করতেই ব্যবসায়ী সেজে ছক কষে দুষ্কৃতীরা অপহরণ করেছিল। চার অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দু’জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
আমের মরশুমে গাছে মুকুল ধরার আগে থেকেই মালদহে আমবাগান কেনাবেচা শুরু হয়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমবাগান মালিকদের কাছ থেকে বাগান কিনে নিয়ে মুকুল আসার পর ফের তা অন্যদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। রতুয়ার চাঁদপুর এলাকার শেখ নজরুল ও তাঁর ভাই শেখ এসরাফিল এলাকার পরিচিত আম ব্যবসায়ী। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বাগান কিনতে চেয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল দুষ্কৃতীরা। দুই দুষ্কৃতী গত শনিবার মোটরবাইকে চেপে এসে বাগান দেখতে শুরু করেন। তাঁদের বাগান দেখাচ্ছিলেন শেখ নজরুল।
এরপর একটি ছোট সাদা গাড়িতে আসে বাকি তিন দুষ্কৃতী। আচমকা তারা শেখ নজরুলকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলে বলে অভিযোগ। ঘটনাচক্রে সেই সময় মোটরবাইকে সেখানে হাজির হয় নজরুলের ভাই শেখ এসরাফিল। মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকেও গাড়িতে তোলার চেষ্টা করা হয়। তিনি কোনও রকমে সেখান থেকে পালান। দুষ্কৃতীরা তাঁর দাদাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার আগে এসরাফিলের মোটরবাইকের যন্ত্রাংশ নষ্ট করে দেয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, অপহরণের কয়েক ঘণ্টা বাদেই এসরাফিলের অন্য একটি ফোনে নজরুলের মোবাইল থেকে থেকে ফোন করে ছ’লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুষ্কৃতীরা। এসরাফিল বলেন, “দুষ্কৃতীরা যে গাড়িটি ব্যবহার করেছিল সেটির নম্বর আমি মনে রেখেছিলাম। রাতেই সেই নম্বর দিয়ে আমি রতুয়া থানায় অভিযোগ জানাই।”
তদন্তে নেমে তল্লাশি চালিয়ে রবিবার রাতে অপহরণে ব্যবহৃত গাড়ির চালক জাফর আলিকে পুলিশ ধরে। তাকে জেরা করে মানিকচক ও ইংরেজবাজার থেকে ধরা হয় তিন অপহরণকারী সুজিত মণ্ডল, সন্তোষ মণ্ডল ও শিমু ওরফে সাইফু শেখকে। তাদের জেরা করে বৈষ্ণবনগরের চকবাহাদুরপুর থেকে উদ্ধার করা হয় ব্যবসায়ী শেখ নজরুলকে। ধৃতেরা প্রত্যেকেই চকবাহাদুরপুরের বাসিন্দা। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। উদ্ধার হওয়ার পর শেখ নজরুল বলেন, “আম বাগান কেনার কথা বলে যে ওরা এমন কাণ্ড ঘটাবে ভাবতেও পারিনি। পুলিশ সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ায় বেঁচে গিয়েছি।”