আমন্ত্রণী ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলার একটি মুহূর্ত। নিজস্ব চিত্র।
হলদিবাড়ি টাউন ক্লাবের পরিচালনায় আমন্ত্রণী ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় জিতল ইউনাইটেড কার্শিয়াং ফুটবল ক্লাব। সোমবার বৃষ্টিভেজা চূড়ান্ত খেলায় এই দলটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বয়েজ ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়ে দেয়। প্রথমার্ধে এবংব দ্বিতীয়ার্ধে দু’টি গোল হয়। খেলার শেষে মোট ছ’টি বিশেষ পুরস্কারের মধ্যে চারটিই জিতে নেয় পাহাড়ের এই দলটি।
হলদিবাড়িতে এ দিন সারাদিন ঝিরঝিরে বৃষ্টি ছিল। খেলার সময়েও তা অব্যাহত থাকে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় মাঠে কোনও কাদা ছিল না। বৃষ্টিভেজা মাঠে বল পড়ে দ্রুত গড়িয়ে যাচ্ছিল। এ রকম বৃষ্টি থাকা সত্ত্বেও মোটামুটি কাদাহীন মাঠের সদ্ব্যবহার দু’টি দলই করেছে। প্রথমার্ধের খেলায় দু’টি দলেরই প্রাধান্য ছিল। বল একবার চট্টগ্রাম দলের গোলের কাছে যায় তো পরের বারে কার্শিয়াংয়ের পেনাল্টি বক্সের মধ্যে যায়। তা হলেও চট্টগ্রামই বেশি সুযোগ পায়। কিন্তু সুযোগে সদ্ব্যবহার তারা করতে পারেনি। বাংলাদেশ মোট খেলায় ছ’টি সুযোগ পায়। অন্য দিকে কার্শিয়াংয়ের দলটি মোট তিনটি সুযোগ পায়। তার মধ্যে দু’টি গোল হয়।
প্রথমার্ধের ২২ মিনিটের সময় বাংলাদেশের একজন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় তাদের পেনাল্টি বক্সের বাইরে ফাউল করলে কার্শিয়াংএর দলটি ফ্রিকিক পায়। পেনাল্টি বক্সের ডান দিক থেকে কার্শিয়াং দলের গৌতম থাপার শট গোলের মুখে আসলে ঈশ্বর রাই হেডে গোল দেন। প্রথমার্ধে কার্শিয়াং আর কোনও সুযোগ পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার দু’মিনিটের মাথায় সুন্দর ভাবে এক জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলের সামনে বল নিয়ে যান। গোলকিপার এগিয়ে এলে বল তার ডান দিকে থাকা রাজ রাউথের কাছে ঠেলে দেন। রাজ গোল করতে কোনও ভুল করেনি।
এই গোলটি হওয়ার পর চট্টগ্রামের খেলোয়াড়রা লাইন্সম্যানের ওপর চড়াও হয়। উত্তেজিত বাদানুবাদ চলতে থাকে। খেলা কিছু সময় বন্ধ থাকে। আবার খেলা শুরু হয়। এর পর মাঠে ফাউলের আধিক্য দেখা দেয়। খেলার মানও নেমে আসে। প্রথমার্ধের মতো খেলা দ্বিতীয়ার্ধে হয়নি। এই বৃষ্টিভেজা মাঠে দর্শক কম ছিল না। মাঠ দর্শকে পরিপূর্ণ ছিল। জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ির মাঠে এত দর্শক দেখা যায় না। ফুটবলপ্রেমী হিসেবে হলদিবাড়ি সেই দিক দিয়ে এই দু’টি শহরের তুলনায় অনেক এগিয়ে।
খেলা শেষে এক গুচ্ছ পুরস্কার দেওয়া হয়। খেলার সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন কার্শিয়াং দলের ঈশ্বর রাই। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয় এই দলের ছিরিং গোলে। সেরা গোলকিপার হয় এই দলের রাজু সিং। রক্ষণভাগের সেরা খেলোয়াড় হয় এই দলের নইন লেপচা। বাংলাদেশ দলের বাবাই সবচেয়ে বেশি গোলদাতার পুরস্কার পায় এবং সেরা কোচ হন এই দলের বিজয় কেতন বড়ুয়া।