পুলিশি হয়রানিতে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু, দাবি

জমি নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে গণ্ডগোলের জেরে এক বিজেপি কর্মীকে ধরতে বারবার বাড়িতে আসছিল পুলিশ। ছেলেকে বাড়িতে না পেয়ে বাবা-মায়ের উপরেই হুমকি, শাসানি শুরু হয় বলে অভিযোগ। তার জেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই বিজেপি কর্মীর বৃদ্ধ বাবা মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। মৃতের নাম নারায়ণ সরকার (৬০)। রবিবার ভোরের ওই ঘটনার পরে হাসপাতাল থেকে বৃদ্ধের মৃতদেহ এলে এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তবে কোথাও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৪৮
Share:

জমি নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে গণ্ডগোলের জেরে এক বিজেপি কর্মীকে ধরতে বারবার বাড়িতে আসছিল পুলিশ। ছেলেকে বাড়িতে না পেয়ে বাবা-মায়ের উপরেই হুমকি, শাসানি শুরু হয় বলে অভিযোগ। তার জেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই বিজেপি কর্মীর বৃদ্ধ বাবা মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। মৃতের নাম নারায়ণ সরকার (৬০)। রবিবার ভোরের ওই ঘটনার পরে হাসপাতাল থেকে বৃদ্ধের মৃতদেহ এলে এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তবে কোথাও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার গঙ্গারামপুর শহরের বোরডাঙি এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী জীবন সরকারের সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী ও খুড়তুতো ভাই বিজেপি-র ওয়ার্ড সভাপতি দেবকুমার সরকারের জমির সীমানা নিয়ে গণ্ডগোল বাঁধে। হাতাহাতিও হয়। দু’পক্ষই গঙ্গারামপুর থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। দাবি, দেবকুমারের অভিযোগে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে পরপর দু’দিন হানা দেয় পুলিশ। মৃতের স্ত্রী সারথীদেবীর অভিযোগ, “জমির সীমানা নিয়ে পারিবারিক বিবাদের পরে থানায় অভিযোগ করা হয়। গত দু’দিন পুলিশ আমাদের বাড়িতে হানা দিয়ে হুমকি দিচ্ছিল। ছেলেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে থানায় হাজির না করালে আমাদের ঘরছাড়া করার কথা বলে পুলিশ হুমকি দেয়। তার জেরেই স্বামী অসুস্থ হয়ে মারা যান।” এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, “গোলমালের ঘটনায় জড়িত অপরপক্ষ তৃণমূল সমর্থক হওয়ায় পুলিশ বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে।”

এদিন দেবকুমারবাবু বলেন, “জীবনবাবুদের হামলায় আমার মা মার খান। থানায় জীবনবাবুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টে আমাদের হুমকি দিতে থাকে। বাধ্য হয়ে রাতে বাড়ির বাইরে থাকছি।” তিনি জানান, তাঁর বৃদ্ধ বাবা ও মাকে হুমকি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “অসুস্থ বাবা মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আরও অসুস্থ হয়ে মারা যান। বিষয়টি দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”

Advertisement

বিজেপি-র জেলার সাধারণ সম্পাদক সনাতন কর্মকার বলেন, “সামনেই গঙ্গারামপুর পুরসভার নির্বাচন। এতে পুলিশ শাসক দলের নির্দেশে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে গ্রেফতারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ঘটনা নিয়ে আমরা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করব।” তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রর বক্তব্য, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তাঁর দাবি, “বিজেপি ঘটনাটি ঘিরে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে।” দক্ষিণ দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস সালভে মুরাগনও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “পারিবারিক বিবাদের ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে তদন্ত হয়। পুলিশের হুমকিতে বৃদ্ধর অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার কোনও ভিত্তি নেই।” গঙ্গারামপুর থানার আইসি অসীম গোপের দাবি, “বৃদ্ধ আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। পারিবারিক বিবাদের জেরে টেনশনে পড়ে বৃদ্ধ মারা যেতে পারেন। এখন ঘটনাটি অন্য ভাবে দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। ওই বৃদ্ধের ছেলের বিরুদ্ধে মারপিটের অভিযোগ রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement