প্রশাসনিক জটিলতায় বন্ধ হস্টেল নির্মাণ

খরচের শংসাপত্র নিয়ে উদ্ভুত জটিলতায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে দিনহাটা কলেজের ছাত্রী আবাস তৈরির কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। ফলে বাইরে থেকে যে সমস্ত ছাত্রী দিনহাটা কলেজে পড়তে আসেন, থাকার জন্য তাদের সেই ভাড়া বাড়িই ভরসা। এ অবস্থায় ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত তাঁদের অভিভাবকরা।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৭
Share:

খরচের শংসাপত্র নিয়ে উদ্ভুত জটিলতায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে দিনহাটা কলেজের ছাত্রী আবাস তৈরির কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। ফলে বাইরে থেকে যে সমস্ত ছাত্রী দিনহাটা কলেজে পড়তে আসেন, থাকার জন্য তাদের সেই ভাড়া বাড়িই ভরসা। এ অবস্থায় ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত তাঁদের অভিভাবকরা। মহকুমার একমাত্র কলেজে বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা ন’হাজারের কিছু বেশি। শুধু ছাত্রীর সংখ্যাই প্রায় চার হাজার।

Advertisement

দিনহাটা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাধন কর বলেন, “নির্দিষ্ট আবেদনপত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে খরচের হিসেব জমা দেওয়ার নিয়ম। কলেজের তরফে আমরা তা করেছি। কিন্তু পূর্ত দফতর, কমিশনের নির্দিষ্ট আবেদনপত্রে হিসেব দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে। এর ফলেই জটিলতা তৈরি হয়েছে।” রাজ্যের পূর্ত পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “কোচবিহারের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ওই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।”

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) দিনহাটা কলেজে ৬৫ শয্যার দোতলা ছাত্রী আবাস তৈরির জন্য এক কোটি টাকা অনুমোদন করে। প্রাথমিক ভাবে ৫০ লক্ষ টাকা কলেজ কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়। ওই বছরের অগস্ট মাসেই ইউজিসির বরাদ্দ অর্থ জেলার পূর্ত দফতরের হাতে দেওয়া হয়। ডিসেম্বর মাস নাগাদ কাজ শুরু করে পূর্ত দফতর। কিন্তু অভিযোগ, কলেজ লাগোয়া চার কাঠা জমির ওপর ছাত্রী আবাসের প্রথম তলার ছাদ পর্যন্ত তৈরি করতেই কেটে যায় তিন বছরের বেশি সময়। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি মেনে একটি ‘স্ট্যাটাস রিপোর্ট’ দেয় পূর্ত দফতর। তাতে মোট ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

Advertisement

কিন্তু, নির্ধারিত আবেদনপত্রে এই খরচের হিসেব পেশের জন্য ইউজিসি জানালেও পূর্ত দফতরের দিক থেকে সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। ২০০৯ সাল থেকে জেলার নির্বাহী বাস্তুকার দফতরের অন্তত তিন জন আধিকারিক বদল হন। বর্তমান নির্বাহী বাস্তুকারকেও ইতিমধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ গোটা ঘটনা জানিয়েছেন। তিনি বিশদে খোঁজ নিয়ে সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে কলেজ কর্তাদের আশ্বস্ত করলেও তাদের উদ্বেগ কমছে না। কারণ, প্রথম দফার ওই নির্মাণ কাজ ২০১০-১১ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল ইউজিসি। এত দিনেও প্রথম তলার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। তার ওপর নির্দিষ্ট আবেদনপত্রে খরচের হিসেব জমা দেয়নি পূর্ত দফতর। তাই আদৌ কবে ছাত্রী আবাস তৈরির কাজ শেষ হবে তা নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ সংশয়ে। কোচবিহারের বর্তমান মুখ্য নির্বাহী বাস্তুকার শংকর নাথ বলেন, “সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার এক্তিয়ার নেই।” দিনহাটা কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদ সম্পাদক দেবাশিস বর্মন জানান, হিসেব দেওয়া নিয়ে জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত ছাত্রী আবাস চালুর বন্দোবস্ত করা না হলে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement