বন্ধ মধু চা বাগান

পুজোয় ঢাক বাজবে কি, সংশয়

ডুয়ার্সের মধু চাবাগানের দুর্গা মন্দিরে এবার আদৌ ঢাক বাজবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে শ্রমিকরা। বুধবার সকাল থেকে বন্ধ ফ্যাক্টরির সামনে স্থায়ী দুর্গা মন্দিরের টিনের শেডে জটলা করে সেটাই আলোচনা করছিলেন বিলাশমণি গোয়ালা,অশ্বিনী ওরাঁওরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩৭
Share:

দুর্গা মণ্ডপের সামনে শ্রমিকদের জটলা।—নিজস্ব চিত্র।

ডুয়ার্সের মধু চাবাগানের দুর্গা মন্দিরে এবার আদৌ ঢাক বাজবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে শ্রমিকরা। বুধবার সকাল থেকে বন্ধ ফ্যাক্টরির সামনে স্থায়ী দুর্গা মন্দিরের টিনের শেডে জটলা করে সেটাই আলোচনা করছিলেন বিলাশমণি গোয়ালা,অশ্বিনী ওরাঁওরা। কারণ, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাই প্রতিমার দাম, ঢাকির টাকা কী ভাবে মেটানো হবে তা নিয়ে চিন্তিত পুজো কমিটির কর্তারাও। মঙ্গলবার বোনাসের দাবিতে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করেন। এরপর প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে চা বাগানের মালিকের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ঘটনার জেরে সন্ধ্যায় হাসিমারা পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে বাগানে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ দিয়ে আসে কর্তৃপক্ষ। আলিপুরদুয়ারের সহকারী শ্রম আধিকারিক বিশ্বজিত্‌ মুখোপাধ্যায় বলেন,“মধু চা বাগানে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। চা বাগানটি খোলার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে আলিপুরদুয়ারে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে।”

Advertisement

মাস খানেক আগে কলকাতায় মালিক পক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনের বৈঠকে ঠিক হয়, এ বছর ১২ শতাংশ হারে মধু চা বাগানের শ্রমিকদের বোনাস দেওয়া হবে। গত শনিবার মালিক পক্ষ নোটিশ দিয়ে জানান, পুজোর আগে ও ডিসেম্বর মাসে দু দফায় ছ’শতাংশ করে বোনাস দেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানান শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কালচিনি এলাকায় ঘেরাও করা হয় মালিকের বাড়ি। তাঁরা দাবি করেন, পুজোর আগেই একবারে ১২ শতাংশ বোনাস দিতে হবে। বুধবার সকাল থেকে বন্ধ ফ্যাক্টরির সমানে দুর্গা মন্দিরের টিনের শেডের নীচে জমায়েত হন শ্রমিকরা। বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানান তাঁরা। বাগান বন্ধের খবর সংবাদপত্রের মাধ্যমে পেলেও বাগানে কর্তৃপক্ষ কোনও নোটিশ ঝোলায়নি বলে অভিযোগ। বাগানের শ্রমিক পঞ্চমণি তিরকে, বিশালমণি গোয়ালারা জানান, গত বছরেও দুর্গা পুজো ও কালী পুজোয় বাগানে দুই দফায় বোনাস হয়। অশ্বিনী ওরাঁও বলেন, “জিনিসের দাম বাড়ছে। পুজোর সময় সামান্য ক’টা টাকা আমরা বোনাস পাই। তা দিয়েই আনন্দ করার চেষ্টা করি। এবার পুজোর আগে বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কি করব বুঝতে পারছি না।”

মধু চাবাগানের কর্মী তথা দুর্গা পুজো কমিটির সম্পাদক সত্যজিত্‌ রায় বলেন, “পুজোতে শ্রমিকদের থেকে চার হাজার টাকা চাঁদা উঠেছে। ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা মালিকপক্ষের। প্রতিমার দাম বাবদ ১৩ হাজার টাকা, ঢাকিদের বায়নার আট হাজার টাকা, প্যান্ডেলের খরচ ও পুরোহিতের প্রণামীর টাকা সহ অন্যান্য খরচ রয়েছে। বাগান বন্ধ থাকলে এই টাকা কোথা থেকে আসবে বুঝতে পারছি না। প্রতিমার বায়না দেওয়া হয়েছে। ঢাকিকেও অগ্রিম দেওয়া হয়েছে। তারা বাকি টাকা চাইবে।”

Advertisement

তৃণমূল চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক অনিরুদ্ধ গোস্বামী জানান, বৃহস্পতিবার দ্রুত বাগান খোলা ও বোনাস নিয়ে আলোচনা করা হবে। আরএসপির শ্রমিক সংগঠনের নেতা সীমান্ত পাল বলেন, “বৃহস্পতিবারের বৈঠকে গিয়ে পুজোর আগে বাগান খোলানোর চেষ্টা করব।”এদিন বাগানের ম্যানেজার মলয় মজুমদারকে টেলিফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement