এনবিএসটিসিতে বিক্ষোভ। রায়গঞ্জে।
পুজোর মুখে বকেয়া বেতন ও পেনশন নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এনবিএসটিসি) কর্মী মহলে। নিগম সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ চললেও সংস্থার কর্মীরা অগস্ট মাসের বেতন পাননি এখনও। বকেয়া পড়েছে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের অগস্টের পেনশনও। নিগমের কর্মী সংগঠনগুলির দাবি, বেতন ও পেনশন মিলিয়ে বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। পুজোর আগে বকেয়া মেটানোর দাবিতে শুরু হয়েছে আন্দোলন।
মঙ্গলবার ওই বকেয়া মেটানোর দাবিতে নিগমের চারটি ডিভিশনে বিক্ষোভ দেখায় ইনটাক প্রভাবিত ওয়াকার্স ইউনিয়নের সদস্যরা। কোচবিহার, শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ, বহরমপুরের ডিভিশনাল ম্যানেজারের দফতরের সামনেও বিক্ষোভ দেখান কর্মীরা। সিটু প্রভাবিত এনবিএসটিসি এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বও বকেয়া মেটানোর দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে এনবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “কর্মীদের চিন্তার কারণ নেই। কয়েকদিনের মধ্যে বেতন হয়ে যাবে। আর বাকি বকেয়ার বিষয়গুলিও দেখা হচ্ছে।”
এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবল চন্দ্র রায় জানান, আজ, বুধবারের মধ্যে অগস্টের বকেয়া বেতন মেটানো যাবে বলে আশা করছি। সপ্তাহ খানেক আগেই জুলাইয়ের পেনশন মেটান হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। পেলেই মেটান হবে। পুজোয় অগ্রিম দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
নিগমের কর্মী সংগঠনগুলির অভিযোগ, ২০১১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত কর্মীদের বেতনের ৭৫ শতাংশ টাকা দেওয়া হয়। অগস্টের বেতন বাবদ নতুন করে বকেয়া পড়েছে ছ’কোটি টাকারও বেশি। বেতন খাতে মোট বকেয়া প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের গড়ে পঞ্চাশ শতাংশ টাকা পেনশন দেওয়া হয়। অগস্টের বকেয়া মিলিয়ে ওই খাতে বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত নিগম কর্মী।
সংস্থার ইনটাক প্রভাবিত ওয়াকার্স ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি সুজিত সরকার বলেন,“কাজ না হলে লাগাতার আন্দোলন হবে।” সিটুর এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জগতজ্যোতি দত্ত বলেন, “আগামী ১২-২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিটি ডিপোয় বিক্ষোভ দেখানো হবে।” শাসক দল প্রভাবিত এনবিএসটিসি ড্রাইভার্স অ্যান্ড তৃণমূল শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের কার্যকরি সভাপতি আব্দুর রহমান ও নিগমের বোর্ড ডিরেক্টর তিলক চৌধুরী জানান, “বাম আমলের বিপুল বকেয়া মেটানো, স্বেচ্ছাবসরের টাকা মেটানোর মত নানা কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে।”