পুজোর আগে বোনাসের সিদ্ধান্ত, খুশি চা শ্রমিকেরা

এ বার পুজোর আগে মজুরির ২০% হারে বোনাস পাবেন চা বাগানের শ্রমিকেরা। রবিবার কলকাতায় মালিক ও শ্রমিক পক্ষের আলোচনার পরে এই ঘোষণার খবর পেয়ে খুশির হাওয়া চা বাগানের শ্রমিক মহল্লায়। বিশেষ করে করম পুজোর আগে বোনাস নিয়ে এই চুক্তি হয়ে গেছে জেনে আনন্দিত তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪৮
Share:

এ বার পুজোর আগে মজুরির ২০% হারে বোনাস পাবেন চা বাগানের শ্রমিকেরা। রবিবার কলকাতায় মালিক ও শ্রমিক পক্ষের আলোচনার পরে এই ঘোষণার খবর পেয়ে খুশির হাওয়া চা বাগানের শ্রমিক মহল্লায়। বিশেষ করে করম পুজোর আগে বোনাস নিয়ে এই চুক্তি হয়ে গেছে জেনে আনন্দিত তাঁরা। যদিও ২৮টি রুগ্ন চা বাগানে তুলনামূলক কম হারে শ্রমিকেরা বোনাস পাবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে ওই বৈঠকে।

Advertisement

ডুয়ার্সের পুজোর কেনাকাটা যেহেতু চা শ্রমিকদের উপরেই অনেকটা নির্ভরশীল, তাই বোনাস নিয়ে এই চুক্তিতে খুশি এলাকার ব্যবসায়ীরা। ইনটেক-এর চা শ্রমিক ইউনিয়ন এনইউপিডব্লু’র সাধারণ সম্পাদক বাবলু মুখোপাধ্যায় জানান, মালিকরা দাবি মেনে নেওয়ায় তাঁরাও খুশি। শ্রমিকরা এবার পুজো ভাল ভাবে কাটাতে পারবেন বলে তাঁরা আশাবাদী। মালবাজারের মার্চেন্টস ওয়েলফেয়ার সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক মোহিত শিকদার বলেন, “পুজোর এক মাস আগে শ্রমিকেরা ২০ শতাংশ হারে বোনাস পাচ্ছেন জেনে আমরা আশাবাদী। এর ফলে শ্রমিকেরা পুজোর কেনাকাটার পরিকল্পনার জন্য কিছুটা সময় পেয়ে যাবেন।”

২০১০ সাল থেকেই মজুরির ২০ শতাংশ হারে বোনাস পাচ্ছেন শ্রমিকেরা। তরাই ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উদয়ভানু দাস জানান, ২৮টি চা বাগান রুগ্ন থাকায় অপেক্ষকৃত কম হারে সে সব বাগানের শ্রমিকেরা বোনাস পাবেন। যেমন, এ বছর রাধারানি চা বাগানে ১১, পাটকাপাড়ায় ১৮, মুজনাইয়ে ১৫, দলমোড়ে ১১, রহিমাবাদ ও তুরতুরিতে ১৬, রামঝোরায় ১৩, কাদম্বিনীতে, কালচিনি ও রায়মাটাঙে ১২, চিনচুলায় ১৩, ডিমায় ১১ ও দলসিংপাড়ায় সাড়ে ১৫ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের পুজোর বোনাস দেওয়া হবে। মারাবাড়ি এবং কুমলাই চা বাগানের শ্রমিকদের অবশ্য বোনাসের বিষয়টি স্থানীয় স্তরে ঠিক করতে বলা হয়েছে। মালিক সংগঠন এনইউপিডব্লু’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত মুখোপাধ্যায় বলেন, “মালিকপক্ষ গত বারের মত এ বছরেও ২০ শতাংশ হারে বোনাস দেবে। ২৮টি রুগ্ন বাগানে বোনাসের ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

এ নিয়ে আরএসপির চা শ্রমিক ইউনিয়ন ডুয়ার্স চা বাগান ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা গোপাল প্রধান বলেন, “ওই চা বাগানগুলি রুগ্ন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মালিক পক্ষ তা খুলেছে। পুনরায় মালিকপক্ষ বাগান চালু করার সময়ে আমরা বোনাসের ব্যাপারে ছাড় দেব বলে চুক্তি হয়েছে।”

এমনিতেই চা শ্রমিকদের মজুরি অত্যন্ত কম। তার উপর নতুন মজুরি চুক্তি এখনও ঘোষণা হয়নি। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের চা শ্রমিক সংগঠন প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ও ২২টিরও বেশি চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের দাবি ছিল, বোনাসের সঙ্গে এককালীন অনুদান দিতে হবে। যাঁরা বছরে ৩০ দিনের বেশি কাজ করেছেন, এমন অস্থায়ী শ্রমিকদের বোনাস দিতে হবে ও বোনাসের ঊর্ধ্বসীমা বাড়াতে হবে। যৌথ মঞ্চের নেতা জিয়াউর আলম জানান, বোনাস নিয়ে ফয়সালা হওয়ায় ৫০ হাজার অতিরিক্ত শ্রমিক লাভবান হবেন। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সম্পাদক তেজকুমার টোপ্পোও বলেন, “বৈঠক এক কথায় ফলপ্রসূ হয়েছে।” তবে নতুন করে চা শ্রমিকদের মজুরি চুক্তি এখনও না হওয়ায় পুজোর আনন্দে শ্রমিকেরা পুরোপুরি মাততে পারবেন না বলেই মনে করছেন শ্রমিক সংগঠনগুলির একাংশ।

তবে ডুয়ার্সের মানাবাড়ি ও কুমলাই চা বাগানের বোনাস সমস্যা এ দিন মেটেনি। তবে পরে তা নিয়ে আলোচনা হবে বলে এ দিনের বৈঠকে ইঙ্গিত মিলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement