শিলিগুড়ি আদালত চত্বরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা আবর্জনার স্তুপ। বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
দুর্গাপুজো ও ঈদ মিটতেই ফের শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার জঞ্জাল সাফাই ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুজোর পর থেকে বেশির ভাগ জায়গায় ঠিক মত সাফাই হচ্ছে না বলে অভিযোগ শহরবাসীর।
শিলিগুড়ি আদালত চত্বরেই জমে রয়েছে আবর্জনার পাহাড়। তা কমপক্ষে এক সপ্তাহ সরানো হয়নি বলে অভিযোগ করছেন আইনজীবীরা। আবর্জনা সরানোর কাজে ঢিলেমি হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা তথা এক প্রাক্তন মেয়র পারিষদও। তবে গাফিলতির কথা স্বীকার করেননি শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার। সমস্যা কোথায় হচ্ছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না বলে দাবি করেছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, জঞ্জাল-সমস্যা বুঝতে জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে শুক্রবার একটি বৈঠকও ডেকেছেন তিনি।
শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকার কোর্ট চত্বর, চার্চ রোড, বিধান মার্কেট, বিধান রোড, ঝংকার মোড় সহ একাধিক এলাকায় জমেছে জঞ্জালের স্তূপ। যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। শিলিগুড়ি আদালত চত্বরেই আবর্জনা ছড়িয়ে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আইনজীবী রতন বণিক। তিনি বলেন, “দু’দিন থেকে লক্ষ্য করছি এখানে আবর্জনা পচে গন্ধ বের হচ্ছে। কেউ ওঠাতে আসছে না। কেন তা বুঝতে পারছি না। আগে এমন দেখিনি।” পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ায় সমস্যা বেড়েছে বলে দাবি করেছেন পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তৃণমূলের দুলাল দত্ত। তিনি বলেন,“প্রশাসকদের পক্ষে নিচু স্তরে কাজ করা বা খবর জানা সম্ভব নয়। এগুলো মূলতঃ নির্বাচিত কাউন্সিলরদের কাজ। তাঁরাই তাগাদা দিয়ে কাজ করান। এখন তাঁরা না থাকাতে সমস্যা হচ্ছে। নতুন বোর্ড তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এ ভাবেই চলবে।”
গত পাঁচ বছর ধরেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরিষেবা বেহাল বলে দাবি করেছেন পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের আরও এক প্রাক্তন মেয়র পারিষদ সিপিএমের মুকুল সেনগুপ্ত। তিনিও প্রশাসকের উপরেই দায় চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, “পুরসভা ওয়ার্ড ভিত্তিক পরিকল্পনা করছে না। ফলে কাজও হচ্ছে না। প্রতিটি ওয়ার্ডে আবর্জনার পাহাড় জমে রয়েছে। তবু তা নিয়ে হেলদোল নেই কারওই।”
জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের মেয়র পারিষদের দায়িত্ব সামলানো আরও এক প্রাক্তন মেয়র পারিষদ কংগ্রেসের সুজয় ঘটক এ ব্যপারে দায়ী করেছেন রাজ্য সরকারকেই। তিনি বলেন, “বর্তমানে রাজ্যে মুখেই উন্নয়ন হচ্ছে। কাজে কিছুই হচ্ছে না। ঘটা করে প্রশাসক বসানো হল। প্রশাসক বোর্ডের কী ভূমিকা তা মাঝেমধ্যেই বুঝতে পারছি না। শহরে নানা এলাকায় জঞ্জাল পড়ে থাকবে কেন?”
যদিও শিলিগুড়ি পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হচ্ছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিদিন সাফাই করাচ্ছি। কিন্তু তা সত্বেও এমন অভিযোগ আসছে কেন তা বুঝতে পারছিনা। এর সমাধানের জন্য বৈঠক ডেকেছি। আশা করছি সমস্যার সমাধান হবে।”