মুখে কালো কাপড় বেঁধে মিছিল জলপাইগুড়ি শহরে। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
নীরবতা পালন এবং মিছিল করে জলপাইগুড়ির বজরাপাড়ার বিস্ফোরণে নিহত ছয়জনকে স্মরণ করলেন পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। মিছিল থেকে দাবি তোলা হল দোষীদের কড়া শাস্তিরও। গত বছর ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ সময় জলপাইগুড়ি শহরে কাছে ধরধরা নদীর ওপর বজরাপাড়া সেতুতে বিস্ফোরণ ঘটে। যে ছয়জন মারা যান, সকলেই পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় বাসিন্দা।
শুক্রবার ওই সেতুর কাছে একটি মাঠে স্মরনমঞ্চ তৈরি করা হয়। স্মরনমঞ্চের সামনে নিহতদের প্রত্যেকের ছবি রেখে সামনে মোমবাতি জ্বালানো হয়। দিনভর শ্রদ্ধা নিবেদন চলে। বিকালে বজরাপাড়া সেতুতে বাসিন্দারা সমবেত হয়ে দুই মিনিট নীরবতা পালন করেন। কিছু সময়ের জন্য ওই রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে মিছিল জলপাইগুড়ি শহর পরিক্রমা করেন। মিছিলে বাসিন্দারা কালো কাপড়ে মুখে বেঁধে ছিলেন। মাইকিং করে যাদের জন্য ছয়টি প্রান হারিয়ে গেল তাদের ধিক্কার জানানো হয়।
পাহাড়পুর পঞ্চায়েতের বজরাপাড়ার পঞ্চায়েত সদস্য, তৃণমূলের বিকাশ দেবনাথ বলেন, “যারা এই বিস্ফোরণ কান্ডে জড়িত তাদের চরম শাস্তি চাই। এখনও ধৃতদের কেন সাজা হচ্ছে না, তা বুঝতে পারছি না। এদিনের কর্মসূচিতে রাজনীতির রং ছিল না। সকলে মিলে মিছিল করেছি।”
বজরাপাড়ায় নিহতদের স্মরণ। জলপাইগুড়িতে শুক্রবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
গত বছর বিস্ফোরণে এলাকার লালমোহন দেবনাথ, রশিদুল ইসলাম, রঞ্জন রায়, পাপ্পু রহমান, আরনিজ হুসেন এবং রফিকুল ইসলাম মারা গিয়েছিলেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা স্মরণমঞ্চে আসেন। তাঁদের মধ্যে রফিকুল ইসলামের মা ফতেমা খাতুন এসে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। অঝোরে কেঁদে ফেলেন। তাঁকে সামলাতে দেখা বাসিন্দাদের। এলাকার বাসিন্দা ভবেশ দেবনাথ এবং মহম্দ মুস্তাফা বলেন, “আমরা দোষীদের কড়া শাস্তি চাই। তাহলে নিহতদের আত্মা শান্তি পাবে।”
এদিন এলাকায় যান তৃণমূল সাংসদ বিজয় চন্দ্র বর্মন। তিনি ফুল দিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধাও জানান। সাংসদ বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। আমি চাই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর সাজা হোক।” শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদারও। তাঁর কথায়, “সমস্ত বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
বিজেপির জেলা সভাপতি দ্বীপেন প্রামানিক বলেন, “আমাদের দলীয় সদস্যরা বজরাপাড়ায় গিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।” এলাকায় না গেলেও সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলার আহ্বায়ক সলিল আচার্য্য বলেছেন, “আমাদের দলের স্থানীয় সদস্য এবং সমর্থকেরা মিছিল অংশ নিয়েছেন। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমরা সব সময় আছি।”