ধরলা চর ঘুরে দেখলেন পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা

ধরলা নদী খাত দখলের হওয়ার অভিযোগের পর এলাকা ঘুরে দেখলেন ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতির নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল। সোমবার দুপুর নাগাদ তাঁরা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন নদী এলাকায় যান। প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ভূমি ও সংস্কার দফতরের ব্লক আধিকারিক অমিত দাস, পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ পরিমল মল্লিক, বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কল্যাণী তরফদার। দুঘণ্টা ধরে তাঁরা দখল হয়ে যাওয়া নদীর দু’পার ঘুরে দেখেন। অতীতে নদী কতটা এলাকা জুড়ে ছিল সেটা জানতে এই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়নাগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৫৬
Share:

৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ধরলা নদী এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতির দল।

ধরলা নদী খাত দখলের হওয়ার অভিযোগের পর এলাকা ঘুরে দেখলেন ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতির নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল। সোমবার দুপুর নাগাদ তাঁরা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন নদী এলাকায় যান। প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ভূমি ও সংস্কার দফতরের ব্লক আধিকারিক অমিত দাস, পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ পরিমল মল্লিক, বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কল্যাণী তরফদার। দুঘণ্টা ধরে তাঁরা দখল হয়ে যাওয়া নদীর দু’পার ঘুরে দেখেন। অতীতে নদী কতটা এলাকা জুড়ে ছিল সেটা জানতে এই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন।

Advertisement

নদীর বেহাল দশা দেখে এ দিন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুভাষ বসু। তিনি বলেন, “এখানে তো দিনদুপুরে ডাকাতি চলছে। নদী থাকতে কিছু মানুষের অপরাধে হাজার হাজার বিঘা জমি সেচের জলের অভাবে শুকিয়ে যাবে এটা মানতে পারব না। ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিককে বলেছি নদীর প্রকৃত এলাকা খুঁজে বার করে রিপোর্ট পাঠাতে। এর পরেই দখল হয়ে যাওয়া পুরো এলাকা উদ্ধার অভিযানে নামব।” ভূমি ও সংস্কার দফতরের ব্লক আধিকারিক বলেন, “পুরনো নথি ঘেটে নদীর এলাকা চিহ্নিত করে দ্রুত একটি রিপোর্ট ব্লক প্রশাসনে পাঠাচ্ছি।” ময়নাগুড়ির যুগ্ম বিডিও সমরেশ রায় বলেন, “ভূমি ও রাজস্ব দফতরের রিপোর্ট হাতে পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে”

পঞ্চায়েত সমিতি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের কর্তাদের এলাকায় দেখে একাংশ বাসিন্দারা কথা বলার জন্য যান। তাঁরা কংক্রিটের খুঁটি পুঁতে দখল করা এলাকা দেখিয়ে তাঁদের জানান, দেড়-দুই দশক আগেও সেখানে নদী ছিল। কিছু ব্যক্তি মাটি ফেলে নদী খাত বুজে জমি বার করেছে। গোপাল সরকার, কৃষ্ণপদ সরকার নামে দুই প্রবীণ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে বলেন, “শুনেছি খুঁটি পুঁতে দখল করা নদী বক্ষের জমির নাকি সরকারি দলিল আছে। এটা কেমন করে হয়?” এ কথা শুনে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ব্লক ভূমি রাজস্ব দফতরের কর্তাকে জানান, এখানে অনেক বড় মাপের দুর্নীতির ঘটনা থাকতে পারে। জালিয়াতি করে সরকারি সম্পত্তি দখলের অভিযোগে মামলা রুজু করা হবে।

Advertisement

বাসিন্দারা জানান, মালবাজারের নেওড়া নদী ময়নাগুড়িতে ধরলা নামে পরিচিত। এই এলাকার ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা দিয়ে ওই নদী গিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ব্লকের ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির সেচের জল এক দশক আগেও ওই নদী থেকে মিলত। কিন্তু বেপরোয়া ভাবে চর দখল হয়ে যাওয়ায় নদী ক্রমশ শুকিয়ে যায়। জল না থাকায় অকেজো হয় কৃষি প্রযুক্তি দফতরের ১২টি নদী থেকে সেচের জল উত্তোলন প্রকল্প বা আর এল আই। এর অগে ছিল নদীর জল আটকে বোরো ধান চাষ। কয়েক মাস আগে ময়নাগুড়ি রোড বাজারের কাছে জাতীয় সড়কের ধারে ধরলা সেতু সংলগ্ন এলাকায় শুরু হয় মাটি ফেলে কংক্রিটের খুঁটি পুঁতে নদী এলাকা দখল করে তেজপাতা বাগান তৈরির কাজ। ইতিমধ্যে একটি বাগানে গাছের চারা বোনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ দিন ওই তেজপাতা বাগানের এলাকা ঘুরে দেখেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement