শহরে জনতা পুলিশ ধুন্ধুমার

দলাদলির পাহাড়পুরে থমকে উন্নয়ন

তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যকে ‘অপহরণ’ করে, নিজেদের দিকে টেনে বোর্ড দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছিল সিপিএমের বিরুদ্ধে। তখন সিপিএম শাসক দলে, রাজ্যেও বাম শাসন চলছে। বিরোধীদের আনা অনাস্থার তলবি সভার আগে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২৫
Share:

তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যকে ‘অপহরণ’ করে, নিজেদের দিকে টেনে বোর্ড দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছিল সিপিএমের বিরুদ্ধে। তখন সিপিএম শাসক দলে, রাজ্যেও বাম শাসন চলছে। বিরোধীদের আনা অনাস্থার তলবি সভার আগে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায় বলে অভিযোগ। ভোটাভুটির দিন সিপিএম নেতার গাড়িতে চেপে সেই সদস্য গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে উপস্থিত হয়ে বামেদের সমর্থনও করেন। শাসক দলের নির্দেশে প্রশাসন পক্ষপাতিত্ব করেছিল বলে অভিযোগ তোলে তত্‌কালীন বিরোধী তৃণমূল। শাসক বিরোধীদের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস চত্বর।

Advertisement

২০০৭ সালের ৩০ জুলাই সেই ঘটনার পরে ফের অনাস্থার তলবি সভা ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত। সে দিনের মতো বুধবারও সব কিছু স্বাভাবিক চললে গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড ক্ষমতাসীনদের হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। তাই বোর্ডে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের সমর্থকরা লাঠি, বাঁশ হাতে তলবি সভায় বিরোধীদের ঢুকতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। শাসক দলের প্রভাবে পুলিশও বিরোধী সদস্যদের গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে দেয়নি বলে অভিযোগ। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে এ দিনও রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গ্রাম পঞ্চায়েত চত্বর। এক পুলিশ কর্মী সহ অন্তত ১০ জন জখম হয়েছেন। ঘণ্টাখানেক ধরে অবরোধের জেরে লাগোয়া ৩১ ডি জাতীয় সড়কে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল।

রাজ্যে বাম শাসন হোক বা পরিবর্তনের পরে তৃণমূল জমানা, জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পাহাড়পুরে শাসক দলের গায়ের জোরে বোর্ড দখলে রাখার প্রবণতা চলছেই বলে অভিযোগ।

Advertisement

শুধু অনাস্থা নয়, পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে হাইকোর্টেও মামলা হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বোর্ডের দখল নিয়ে গায়ের জোর ফলানো কিংবা আদালতে মামলা থাকলেও উন্নয়ন নিয়ে কারও মাথাব্যাথা নেই। এলাকায় ভাঙাচোরা রাস্তা। নেই পর্যাপ্ত পথবাতি এবং পানীয় জলের ব্যবস্থাও। ইন্দিরা গাঁধী কলোনির বাসিন্দা বিমল দাস অভিযোগ করে বলেন, “গ্রামে ভাল রাস্তা খুঁজে বেড়াতে হবে। বর্ষার সময় চলাচল করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।”

অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের ধারাবাহিকতায় পাহাড়পুর আছে পাহাড়পুরেই।এলাকার যুব তৃণমূল সভাপতি লুতফর রহমান বলেন, “২০০৭ সালে অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে তলবি সভায় সিপিএম বিরোধী সদস্যদের পঞ্চায়েত অফিসে যেতে দেয়নি। কিন্তু এ দিন সাধারণ বাসিন্দারা রুখে দাঁড়িয়েছেন। আমরা বাধা দিইনি।” বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূল নেত্রী রাহেনা খাতুন উন্নয়নের কাজ ব্যহত হওয়ার কথা স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, “ধারাবাহিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে উন্নয়নের কাজ ব্যহত হয়েছে। প্রতি পদে বাধার সৃষ্টি হলে কাজ করা যায় না।” সিপিএমের সদর জোনাল কমিটির সম্পাদক জিতেন দাস বলেন, “২০০৭ সালে বিরোধীরা নিজেরাই তলবি সভায় অনুপস্থিত ছিল। সে সময় আমাদের উপরেও হামলা হয়। কিন্তু এ দিন তৃণমূল লাঠি হাতে বিরোধীদের বাধা দিয়েছে।”

বুধবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement