দুর্নীতির নালিশ নিয়ে হইচই বোর্ড মিটিঙে

বিভিন্ন এলাকা খুঁড়ে একটি বেসরকারি ইন্টারনেট পরিষেবাদানকারী সংস্থার কেবলের লাইন বসানোর কাজে পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে বোর্ড মিটিংয়ে হইচই বাঁধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪৪
Share:

বিভিন্ন এলাকা খুঁড়ে একটি বেসরকারি ইন্টারনেট পরিষেবাদানকারী সংস্থার কেবলের লাইন বসানোর কাজে পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে বোর্ড মিটিংয়ে হইচই বাঁধে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে তা নিয়ে মেয়র এবং বর্তমান পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তৃণমূল ও বাম কাউন্সিলর উভয় পক্ষ। মেয়র, পুর কমিশনার এবং পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ওই কাজে আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িত থাকার। কী ভাবে ওই সংস্থা কাজ করেছে? কত টাকার বিনিময়ে কাজ হয়েছে, তা নিয়ে তৃণমূল এবং বাম কাউন্সিলররা একের পর এক প্রশ্ন তুললে সরগরম হয়ে ওঠে সভা। শেষ পর্যন্ত সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

Advertisement

সভায় এ দিন বাম কাউন্সিলর দিলীপ সিংহ অভিযোগ তোলেন, তাঁর ওয়ার্ডে রাতে মাটি খুঁড়ে, জল সরবরাহ লাইনের ক্ষতি করে একটি সংস্থা কেবল বসানোর কাজ করছে দেখে তিনি পুর কমিশনার, মেয়র এবং পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদদের জানান। কিন্তু কেউই ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ। উল্টে ওই সংস্থা প্রচুর টাকা পুর কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে বলে দিলীপবাবুর কাছে তারা দাবি করেন। বোর্ড মিটিংয়ে দিলীপবাবু তা নিয়ে প্রশ্ন তুললে মেয়র জানান বিষয়টি তাঁর জানা নেই। এবং ওই সংস্থাকে কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও কেন ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দিলীপবাবু। তারা পুলিশে অভিযোগ জানানোর দাবি তোলেন। তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল জানান, মেয়র বা পুর কর্তৃপক্ষ ঠিক কথা বলছেন না। কেন না ইতিমধ্যেই ওই সংস্থাকে পুরসভার তরফে চিঠি পাঠিয়ে ওই কাজ করার জন্য ৬ কোটি ৭৪ লক্ষ ৭০ হাজার ৫০০ টাকা চাওয়া হয়েছে। মেয়রের অনুমোদনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। সেই চিঠির প্রতিলিপিও তাঁদের কাছে রয়েছে। মেয়র এর পর জানান, পুরসভার দফতরে সংস্থার তরফে চেক ‘ডকেট’ করে জমা করা হয়েছে। তা শুনেই কৃষ্ণবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, “কেন এ ভাবে ‘চেক’ জমা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গড়া হোক। এতে মেয়র ও তাঁর লোকজন যুক্ত।” বিরোধী কাউন্সিলর মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “তদন্ত কমিটি নয়। তাঁরা চান পুলিশে অবিলম্বে অভিযোগ দায়ের করা হোক। তা হলেই সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আসবে।” তা নিয়েই সভায় হইচই বাঁধে। ওই সংস্থাকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে সেই ফাইল আনানো হয়। দেখা যায় ১,১৭৩৪০ মিটার কেবল পাততে ওই টাকা ধার্য করা হয়েছে। ৫ এপ্রিল সংস্থার কর্তাকে পুরসভার তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে নির্বাচনের পর টাকা জমা নিয়ে কাজের অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। মেয়র বলেন, “খোঁজ নিয়ে জানলাম সংস্থার তরফে যে চেকগুলি পাঠানো হয়েছিল তা জমা করা হয়েছে। সংস্থাকে এখনও অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে বিস্তারিত পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ জানেন। তিনি আজ সভার আসেননি। শীঘ্রই এ ব্যাপারে বৈঠক ডেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তা অবশ্য শুনতে চায়নি তৃণমূল বা সিপিএম। পূর্ত বিভাগে মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনেই সংস্থার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী বিধিনিষেধে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়নি।” তা সত্ত্বেও সংস্থাটি বিভিন্ন জায়গায় কাজ শুরু করেছে অভিযোগ পেয়ে তিনি নিজে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement