শিলিগুড়িতে সভায় মহম্মদ সেলিম ও মানব মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
পুরসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বামেরা দুর্নীতির অভিযোগকে প্রধান হাতিয়ার করতে চাইছে। শনিবার শিলিগুড়ির টিকিয়াপাড়া মাঠে সিপিএমের জনসভায় বক্তারা দুর্নীতির অভিযোগেই রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলকে বিঁধেছেন। রাজ্যস্তরে সারদা কেলেঙ্কারি সঙ্গে শিলিগুড়িতে এসজেডিএ-এর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে লাগাতার প্রচার শুরুর কথাও এ দিন সভা মঞ্চ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ দিনের জনসভায় দলের তরফে মূল বক্তা ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন ২ বাম মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, মানব মুখোপাধ্যায় এবং রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিম।
এ দিনের সভায় বক্ত্যবের আগাগোড়া সারদা কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন মহম্মদ সেলিম। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল দলটা একটি প্রাইভেট কোম্পানির মতো পরিচালিত হয়েছে। সেই কোম্পানিতে সারদার খলনায়ক সুদীপ্ত সেনও ছিলেন। পরে সবকিছু প্রকাশ্যে চলে আসায় তৃণমূল দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেছে। শিলিগুড়িতেও এসজেডিএতে শাসক দলের নেতারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যের সাধারণ বাসিন্দারাই এর জবাব তৃনমূলকে দেবে।” কেন্দ্রে বিজেপি এবং রাজ্যে তৃণমূল দুই দলই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে বলে সেলিম অভিযোগ করেন। প্রাক্তন পর্যটন মন্ত্রী মানববাবু দাবি করেন, “তৃণমূল কিন্তু সুদীপ্ত সেনের টাকা লুঠ করেনি। রাজ্যের গরিব মানুষের কষ্ট করে জমানো পুঁজি লুঠ করেছে। তার জন্য তৃণমূলের কাছে সাধারণ বাসিন্দারাই এখন জবাব চাইতে শুরু করেছে।”
দীর্ঘদিন ধরেই এ দিন টিকিয়াপাড়ার জনসভা নিয়ে বামেরা প্রচার চালালেও, এ দিনের সভার ভিড় নিয়ে দলের একাংশ নেতা-কর্মীই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সভায় বক্তব্য চলার সময়েই মাঠ ফাঁকা হতে শুরু করে। যদিও, দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, সন্ধ্যে হয়ে যাওয়ায় শেষের দিকে কেউ কেউ মাঠ ছেড়ে চলে যান। তবে মাঠ ছাড়াও আশেপাশে বাসিন্দাদের যথেষ্ট ভিড় হয়েছিল বলে দলের নেতাদের দাবি। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোকবাবুর দাবি, “এ দিন শিলিগুড়ি জোনাল কমিটির সভা ছিল। সেই মতো যথেষ্ট ভিড় হয়েছিল। সারদা কেলেঙ্কারি তো রয়েছে, সেই সঙ্গে শিলিগুড়িতেও এসজেডিএ সহ নানা সংস্থায় আর্থিক অনিময়ের অভিযোগে সাধারণ বাসিন্দারা বিরক্ত। আগামীতেই তার প্রমাণ শাসক দল পেয়ে যাবে।” দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদক জীবেশ সরকারও সভায় বক্তব্য রাখেন।
দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সমম্পাদক কৃষ্ণ পালের অবশ্য দাবি, “বামেরা যতই বিভ্রান্তি মূলক প্রচার চালান, সাধারণ বাসিন্দারা তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছে। বামেরা নানা রকম অনৈতিক জোট করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে। মানুষ ওদের কথা শুনতে চায় না। বামেরাই আগামী দিনে তা বুঝতে পারবেন।”